রবিবার, ৬ সেপ্টেম্বর, ২০১৫

হারানো বস্তু/ব্যক্তির চেয়ে উত্তমটি পেতে নিম্ম দোয়া পড়ুন

হারানো বস্তু/ব্যক্তির চেয়ে উত্তমটি পেতে নিম্ম দোয়া পড়ুন
জীবনে চলার পথে অনেক সময় হারাতে হয় অনেক কিছু যেমন নিজ প্রিয় বস্তু বা ব্যক্তি। আর তাতে সকলকেই মর্মাহত হতে হয়। কিন্তু এমন একটি ব্যবস্থাওতো জেনে রাখা প্রয়োজন, যাতে করে আপনি উক্ত বস্তুর চেয়ে উত্তম কিছু পেয়ে যান। আর সেই ব্যবস্থাই আমাদেরকে শিক্ষা দিয়েছেন, আমাদের প্রিয় নবী রাসূল (সা.)। নিম্মে দোয়াটি পেশ করা হলো-
صحيح مسلم (2/ 631)
3 - (918) حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ أَيُّوبَ، وَقُتَيْبَةُ، وَابْنُ حُجْرٍ، جَمِيعًا عَنْ إِسْمَاعِيلَ بْنِ جَعْفَرٍ، قَالَ ابْنُ أَيُّوبَ: حَدَّثَنَا إِسْمَاعِيلُ، أَخْبَرَنِي سَعْدُ بْنُ سَعِيدٍ، عَنْ عُمَرَ بْنِ كَثِيرِ بْنِ أَفْلَحَ، عَنْ ابْنَ سَفِينَةَ، عَنْ أُمِّ سَلَمَةَ، أَنَّهَا قَالَتْ: سَمِعْتُ رَسُولَ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، يَقُولُ: " مَا مِنْ مُسْلِمٍ تُصِيبُهُ مُصِيبَةٌ، فَيَقُولُ مَا أَمَرَهُ اللهُ: {إِنَّا لِلَّهِ وَإِنَّا إِلَيْهِ رَاجِعُونَ}، اللهُمَّ أْجُرْنِي فِي مُصِيبَتِي، وَأَخْلِفْ لِي خَيْرًا مِنْهَا، إِلَّا أَخْلَفَ اللهُ لَهُ خَيْرًا مِنْهَا "، قَالَتْ: فَلَمَّا مَاتَ أَبُو سَلَمَةَ، قُلْتُ: أَيُّ الْمُسْلِمِينَ خَيْرٌ مِنْ أَبِي سَلَمَةَ؟ أَوَّلُ بَيْتٍ هَاجَرَ إِلَى رَسُولِ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، ثُمَّ إِنِّي قُلْتُهَا، فَأَخْلَفَ اللهُ لِي رَسُولَ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، قَالَتْ: أَرْسَلَ إِلَيَّ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ حَاطِبَ بْنَ أَبِي بَلْتَعَةَ يَخْطُبُنِي لَهُ، فَقُلْتُ: إِنَّ لِي بِنْتًا وَأَنَا غَيُورٌ، فَقَالَ: «أَمَّا ابْنَتُهَا فَنَدْعُو اللهَ أَنْ يُغْنِيَهَا عَنْهَا، وَأَدْعُو اللهَ أَنْ يَذْهَبَ بِالْغَيْرَةِ»

হযরত উম্মু সালমা (রা.) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ (সা.) কে বলতে শুনেছি : কোন মুসলমানের উপর মুসীবত আসলে যদি সে বলে; আল্লাহ যা হুকুম করেছেন ‘‘إِنَّا لِلَّهِ وَإِنَّا إِلَيْهِ رَاجِعُونَ اللهُمَّ أْجُرْنِي فِي مُصِيبَتِي، وَأَخْلِفْ لِي خَيْرًا مِنْهَا’’ (অর্থাৎ ‘‘আমরা আল্লাহরই জন্যে এবং তারই কাছে ফিরে যাব, হে আল্লাহ! আমাকে আমার মুসীবতে সওয়াব দান কর এবং এর বিনিময়ে এর চেয়ে উত্তম বস্তু দান কর’’) তবে মহান আল্লাহ তাকে এর চেয়ে উত্তম বস্তু দান করে থাকেন। (তার বাস্তব প্রমাণ হলো) উম্মু সালমা (রা.) বলেন, যখন (আমার স্বামী) আবূ সালমা ইনতিকাল করেন, আমি মনে মনে ভাবলাম, কোন মুসলমান আবূ সালমা থেকে উত্তম? তিনি সর্বপ্রথম ব্যক্তি যিনি হিজরত করে রাসূলুল্লাহর নিকট পৌঁছে গেছেন। এতদসত্ত্বেও আমি এ দু’আ গুলো পাঠ করলাম। এরপর মহান আল্লাহ (আমার স্বামী) আবূ সালমার স্থলে রাসূলুল্লাহ (সা.) এর ন্যায় স্বামী দান করেছেন। উম্মু সালমা (রা.) বলেন, আমার নিকট রাসূলুল্লাহ (সা.) বিয়ের পয়গাম পৌঁছাবার উদ্দেশ্যে হাতেব ইবনে আবূ বালতায়াকে পাঠালেন। আমি বললাম, আমার একটা কন্যা আছে আর আমার জিদ বেশী। তখন রাসূলুল্লাহ (সা.) বললেন, তার কন্যা সম্পর্কে আমি আল্লাহর কাছে দোয়া করবো যাতে তিনি তাকে তার কন্যার দুশ্চিন্তা থেকে মুক্তি দেন। আর (তার সম্পর্কে) দু’আ করবো যাতে আল্লাহ তার জিদ দূর করে দেন। সহীহ মুসলিম-২/৬৩১, হাদীস-৯১৮। হাদীসটি আরো অসংখ্য কিতাবে রয়েছে।

শুধু দোয়াটি আলাদা ভাবে দেখুন : ‘‘إِنَّا لِلَّهِ وَإِنَّا إِلَيْهِ رَاجِعُونَ اللهُمَّ أْجُرْنِي فِي مُصِيبَتِي، وَأَخْلِفْ لِي خَيْرًا مِنْهَا’’

উক্ত ঘটনাটির মাঝে আরো অনেক শিক্ষনীয় বিষয় রয়েছে, গভীর মনোযোগ দিলে তা স্পষ্ট হয়ে যাবে। যেমনি ভাবে ‘‘উম্মে সালমা (রা.) এর উক্ত হাদীসের মাঝে বিবাহের পূর্বে ‘নিজ জিদ’ এর আলোচনা নিজেই উল্লেখ করে দেয়া। ও রাসূল (সা.) দোয়া করবে বলে গ্রহণ করা।’’ এমন দৃষ্টান্ত বর্তমান যুগের ছেলে মেয়েদের মধ্যে পাওয়া অনেক কঠিন।

প্রিয় পাঠক! আমি নিজেও আমার জীবনের বেশ কিছু সময়ে উক্ত দোয়াটি পাঠ করেছি, আর বাস্তব প্রমাণও পেয়েছি। তাই আমরা সকলেই উক্ত দোয়াটির উপর আমল করার চেষ্টা করি, আল্লাহ তায়ালা সকলকে তাওফীক দান করুন। আমীন

ইতি মুফতী মো. ছানা উল্লাহ
প্রধান মুফতী ও গবেষক
মারকাযুল ইসলাহ, বাংলাদেশ।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন