সোমবার, ৩১ আগস্ট, ২০১৫

কেমন চরিত্র ছিল আম্মাজান আয়েশা (রা.) এর! আর কি বলছে কথিত আহলে হাদীস..!

কেমন চরিত্র ছিল আম্মাজান আয়েশা (রা.) এর! আর কী বলছে কথিত ‘‘আহলে হাদীস’’..!
কিছু দিন পূর্বে এক কথিত ‘‘আহলে হাদীস’’ একটি আলোচনার প্রেক্ষিতে আম্মাজান আয়েশা (রা.) কে গালিগালাজ করছিলো। সাথে সাথে আরো বললো, সাহাবীদের কথা প্রমাণযোগ্য নয়!!
আমি তার কথা শুনে খুবই মর্মাহত হলাম। তার প্রতি খুবই আফসোস হল। সে যদি আম্মাজান আয়েশা (রা.) এর পরিচয় জানত, তাহলে মনে হয় এমন কথা বলা আদৌ সম্ভব হতো না। কথিত ‘‘আহলে হাদীসদেরকে’’ এই সব বুলি, তাদের গুরুজনরাই শিক্ষা দিয়েছে। দেখুন তার কিছু দৃষ্টান্ত-
ভারতবর্ষে লা-মাযহাবীদের প্রধান মুখপাত্র নবাব ছিদ্দিক্ব হাসান খানের নিজ গ্রন্থ থেকে কয়েকটি উক্তি নিন্মে প্রদত্ত হল-
قول الصحابى لاتقوم به حجة وفهم الصحابى ليس بحجة ـ
‘‘সাহাবাগণের (রা.) কথা দলীল স্বরূপ পেশ করা যাবে না এবং তাদের বুঝ নির্ভরযোগ্য নয়।’’ আর রওজাতুন নাদীয়াহ-১/১৪১, ১/১৫৪।

রবিবার, ৩০ আগস্ট, ২০১৫

الجنَّةُ تحتَ أقدامِ الأمَّهاتِ ‘‘মায়ের পায়ের নিচে (সন্তানের) বেহেশত’’ উক্ত বাক্যে হাদীসটি কি সহীহ?

الجنَّةُ تحتَ أقدامِ الأمَّهاتِ
‘‘মায়ের পায়ের নিচে (সন্তানের) বেহেশত’’ উক্ত বাক্যে হাদীসটি কি সহীহ?
বেশ কিছু ভাই প্রশ্ন করেছেন, উক্ত শব্দে হাদীসটি সহীহ কি না? এ বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা করতে। যদি উক্ত হাদীস সহীহ না হয়, তাহলে উক্ত মর্মে অন্য কোন হাদীস রয়েছে কি? নিম্মে বিস্তারিত আলোচনা করা হলো....

উক্ত শব্দে হাদীসটি সহীহ না বরং এটি যয়ীফ ও মুনকার। নিম্মে হাদীসটি সনদসহ দেখুন-
الكامل في ضعفاء الرجال (8/ 64)
قَالَ الشَّيْخُ: وَهَذَا حَدِيثٌ مُنْكَرٌ بِهَذَا الإِسْنَادِ يرويه، عَن أَبِي المليح مُوسَى بْن مُحَمد، وأَبُو المليح لا بأس به.
حَدَّثَنَا عُمَر بْنُ سِنَانٍ، حَدَّثَنا عباس بن الوليد الخلال، حَدَّثَنا مُوسَى بْنُ مُحَمد بْنِ عطاء، حَدَّثَنا أَبُو الْمُلَيْحِ عَنْ مَيْمُونَ بْنِ مَهْرَانَ، عنِ ابْنِ عَبَّاسٍ، قَال: قَال رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ الْجَنَّةُ تَحْتَ أَقْدَامِ الأمهات من شئن أدخلن، ومَنْ شئن أخرجن
অর্থ : হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.) থেকে বর্ণিত। রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেন, মায়ের পায়ের নিচে (সন্তানের) বেহেস্ত। যে চায়, সে যেন তাতে প্রবেশ করে আর না চাইলে যেন বের হয়ে যায়। আল কামেল লি ইবনে আদী-৮/৬৪।

শনিবার, ২৯ আগস্ট, ২০১৫

মৃত ব্যক্তিকে গোসল দিলে কি কোন ফযীলত পাওয়া যায়?

মৃত ব্যক্তিকে গোসল দিলে কি কোন ফযীলত পাওয়া যায়?
গুনাহ থেকে মুক্তি পেতে চান! জান্নাতে রেশমী বস্ত্র পরিধান করতে চান! আরো কত নেয়ামত....
গত বৃহস্পতিবার আমার বড় চাচি ইন্তেকাল করেন । তাই হঠাৎ করে আমার শ্রদ্ধেয় পিতা জানতে চাইলেন যে, ‘‘মৃত ব্যক্তিকে গোসল করালে কি কোন ফযীলত পাওয়া যায়?’’ তখন আমি একটি মহলে বসা ছিলাম। এই প্রশ্ন ঐ মহলে উঠালে অনেকেই এই ফাযায়েল সম্পর্কে কিছুই জানেন না বলে ব্যক্ত করলেন। তাই আজ ইচ্ছে হলো, এই বিষয়টি সকলকে জানিয়ে দেয়া। যাতে করে আমরাও মৃত ব্যক্তিকে গোসল দিয়ে সাওয়াবের অধিকারী হতে পারি।


০১. হযরত আবূ রাফে’ (রা.) এর হাদীস-
المعجم الكبير للطبراني (1/ 315)
929 - حَدَّثَنَا هَارُونُ بْنُ مَلُولٍ الْبَصْرِيُّ، ثنا عَبْدُ اللهِ بْنُ يَزِيدَ الْمُقْرِئُ، ثنا سَعِيدُ بْنُ أَبِي أَيُّوبَ، عَنْ شُرَحْبِيلَ بْنِ شَرِيكٍ، عَنْ عَلِيِّ بْنِ رَبَاحٍ، قَالَ: سَمِعْتُ أَبَا رَافِعٍ، يَقُولُ: قَالَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «مَنْ غَسَّلَ مَيِّتًا فَكَتَمَ عَلَيْهِ غُفِرَ لَهُ أَرْبَعِينَ كَبِيرَةً،.......»
হযরত আবূ রাফে (রা.) থেকে বর্ণিত। রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেন, যে ব্যক্তি কোন মৃত ব্যক্তিকে গোসল দিলো, আর তার দোষ ক্রটিগুলো ঢেকে রাখলো, আল্লাহ তায়ালা তার চল্লিশটি কবীরা গুনাহ মাফ করে দিবেন। আল মুজামুল কাবীর-১/৩১৫, হাদীস-৯২৯, মুসতাদরাকে হাকেম-১/৫০৫, হাদীস-১৩০৭, আস সুনানুল কুবরা-৩/৫৫৪, হাদীস-৬৬৫৫ ইত্যাদি

শনিবার, ১৫ আগস্ট, ২০১৫

জাল হাদীসের কবলে কেন বন্দি আজ নারী সমাজ? ‘‘স্বামীর পায়ের নিচে স্ত্রির বেহেস্ত’’ এটি কি কোন হাদীস?

জাল হাদীসের কবলে কেন বন্দি আজ নারী সমাজ?
‘‘স্বামীর পায়ের নিচে স্ত্রির বেহেস্ত’’ এটি কি কোন হাদীস?
সাম্প্রতিক কালে যে কোন বিষয়ে নারী সমাজের মুখ বন্ধ করার জন্য একটি সুন্দর বুলি তৈরী করা হয়েছে। আর তা হলো, কোন নারী স্বামীর বৈধ ও অবৈধ যে কোন ধরনের হুকুম অমান্য করতে দেখা গেলেই বলা হয়, তুমি কি জানো না? হাদীসে আছে "الجنة تحت أقدام الزوج" ‘‘স্বামীর পায়ের নিচে স্ত্রি বেহেস্ত’’ তুমি তো বেহেস্ত পাবে না। 
তখন বাধ্য হয়ে নারীগণ চুপ মেরে যায়। প্রকৃত পক্ষে কোরআন ও সুন্নাহের কোথাও "الجنة تحت أقدام الزوج" তথা (‘‘স্বামীর পায়ের নিচে স্ত্রির বেহেস্ত’’) এমন বর্ণনা পাওয়া যায় না। তাই এধরনের ভিত্তিহীন বর্ণনা আমদের পরিহার করা উচিৎ।

বৃহস্পতিবার, ৬ আগস্ট, ২০১৫

জাল হাদীসের কবলে কেন দেশ প্রেম?

জাল হাদীসের কবলে কেন দেশ প্রেম?
    বর্তমানে দেশের ভালোবাসা নিয়ে কোন কথা বললেই সকলের দৃষ্টি চলে যায় حب الوطن من الايمان তথা ‘‘স্বদেশ প্রেম ঈমানের অঙ্গ’’ নামক জাল হাদীসটির প্রতি। (যাকে হাফেযে হাদীস, মুহাদ্দেসগণ ভিত্তি নেই বলে দাবি করেছেন। যেমন আল্লামা সাগানী (রহ.), মোল্লা আলী কারী (রহ.), আল্লামা সাখাবী (রহ.) প্রমুখগণ। রিসালাতুল মাওযুআত-৭, আল মাসনু-৯১, আল মাকাসিদুল হাসানা-২১৮, তাযকিরাতুল মাওযূআত-১১, আদ্দুরারুল মুনতাসিরা-১১০, মিরকাতুল মাফাতীহ-৪/৫, আল মাওযূআতুল কুবরা-৬১, আল লুউলুউল মারসূ-৩৩ ইত্যাদি।)

তাই অনেকেই দেখা যায় এ বিষয়ে ঢালাওভাবে ফাতওয়া দিয়ে দেয় যে, ‘‘স্বদেশ প্রেম’’ এর বিষয়ে কোন  হাদীস নেই। আসলে এটি সম্পূর্ণ ভূল ধারণা। তাই আজকে এ বিষয়ে কিছু লিখার ইচ্ছা করলাম...

এটা অবধারিত সত্য যে, একজন মানুষ যখন পৃথিবীর বিশাল ভূখন্ডের কোনো এক অংশে জন্মলাভ করে, সেখানকার আলো-বাতাস গ্রহণ করে, সেখানে বেড়ে ওঠে। তখন স্বাভাবিকভাবেই সেখানকার মাটি-মানুষের প্রতি অন্যরকম হৃদ্যতা ও আপনত্ব অনুভব করে। জন্মভূমির প্রতি মানুষের এই স্বভাবজাত আকর্ষণকে ইসলাম মূল্যায়ন করেছে।

বুধবার, ৫ আগস্ট, ২০১৫

‘‘ইয়ামানকে’’ আমি যে কারণে ভালোবাসি, কিন্তু আপনি কেন বঞ্চিত হবেন?

‘‘ইয়ামানকে’’ আমি যে কারণে ভালোবাসি, কিন্তু আপনি কেন বঞ্চিত হবেন?
আমাদের অনেকেই আজ আমেরিকা, রাশিয়া, চীন ও ভারত ইত্যাদি রাষ্টের ভালোবাসায় মুগ্ধ হয়ে আছে। অথচ রাসূল (সা.) এর হাদীস দ্বারা যেই সব রাষ্টের ভালোবাসার প্রতি ইঙ্গিত করা হয়েছে, তার থেকে আমরা বে-খবর। তাই আজ এমন একটি রাষ্ট তথা ইয়ামানকে নিয়ে আলোচনা করা হবে....
 
 রাসূল (সা.) যেই হাদীস দ্বারা ইয়ামানকে ভালোবাসার প্রতি ইংঙ্গিত দিয়েছেন....
 ০১ নং হাদীস-
صحيح البخاري (5/ 173)
4388 - حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ بَشَّارٍ، حَدَّثَنَا ابْنُ أَبِي عَدِيٍّ، عَنْ شُعْبَةَ، عَنْ سُلَيْمَانَ، عَنْ ذَكْوَانَ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ، عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «أَتَاكُمْ أَهْلُ اليَمَنِ، هُمْ أَرَقُّ أَفْئِدَةً وَأَلْيَنُ قُلُوبًا، الإِيمَانُ يَمَانٍ وَالحِكْمَةُ يَمَانِيَةٌ، وَالفَخْرُ وَالخُيَلاَءُ فِي أَصْحَابِ الإِبِلِ، وَالسَّكِينَةُ وَالوَقَارُ فِي أَهْلِ الغَنَمِ»