বৃহস্পতিবার, ৬ আগস্ট, ২০১৫

জাল হাদীসের কবলে কেন দেশ প্রেম?

জাল হাদীসের কবলে কেন দেশ প্রেম?
    বর্তমানে দেশের ভালোবাসা নিয়ে কোন কথা বললেই সকলের দৃষ্টি চলে যায় حب الوطن من الايمان তথা ‘‘স্বদেশ প্রেম ঈমানের অঙ্গ’’ নামক জাল হাদীসটির প্রতি। (যাকে হাফেযে হাদীস, মুহাদ্দেসগণ ভিত্তি নেই বলে দাবি করেছেন। যেমন আল্লামা সাগানী (রহ.), মোল্লা আলী কারী (রহ.), আল্লামা সাখাবী (রহ.) প্রমুখগণ। রিসালাতুল মাওযুআত-৭, আল মাসনু-৯১, আল মাকাসিদুল হাসানা-২১৮, তাযকিরাতুল মাওযূআত-১১, আদ্দুরারুল মুনতাসিরা-১১০, মিরকাতুল মাফাতীহ-৪/৫, আল মাওযূআতুল কুবরা-৬১, আল লুউলুউল মারসূ-৩৩ ইত্যাদি।)

তাই অনেকেই দেখা যায় এ বিষয়ে ঢালাওভাবে ফাতওয়া দিয়ে দেয় যে, ‘‘স্বদেশ প্রেম’’ এর বিষয়ে কোন  হাদীস নেই। আসলে এটি সম্পূর্ণ ভূল ধারণা। তাই আজকে এ বিষয়ে কিছু লিখার ইচ্ছা করলাম...

এটা অবধারিত সত্য যে, একজন মানুষ যখন পৃথিবীর বিশাল ভূখন্ডের কোনো এক অংশে জন্মলাভ করে, সেখানকার আলো-বাতাস গ্রহণ করে, সেখানে বেড়ে ওঠে। তখন স্বাভাবিকভাবেই সেখানকার মাটি-মানুষের প্রতি অন্যরকম হৃদ্যতা ও আপনত্ব অনুভব করে। জন্মভূমির প্রতি মানুষের এই স্বভাবজাত আকর্ষণকে ইসলাম মূল্যায়ন করেছে।

০১. দেখুন সহীহ বুখারীর তিন নং হাদীসটি, যার মাঝে রাসূল (সা.) এর দেশের প্রতি ভালোবাসা কেমন ছিল তা ভেঁসে উঠে-
صحيح البخاري (1/ 7)
فَقَالَتْ لَهُ خَدِيجَةُ: يَا ابْنَ عَمِّ، اسْمَعْ مِنَ ابْنِ أَخِيكَ، فَقَالَ لَهُ وَرَقَةُ: يَا ابْنَ أَخِي مَاذَا تَرَى؟ فَأَخْبَرَهُ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ خَبَرَ مَا رَأَى، فَقَالَ لَهُ وَرَقَةُ: هَذَا النَّامُوسُ الَّذِي نَزَّلَ اللَّهُ عَلَى مُوسَى، يَا لَيْتَنِي فِيهَا جَذَعًا، لَيْتَنِي أَكُونُ حَيًّا إِذْ يُخْرِجُكَ قَوْمُكَ، فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «أَوَ مُخْرِجِيَّ هُمْ»، قَالَ: نَعَمْ، لَمْ يَأْتِ رَجُلٌ قَطُّ بِمِثْلِ مَا جِئْتَ بِهِ إِلَّا عُودِيَ، وَإِنْ يُدْرِكْنِي يَوْمُكَ أَنْصُرْكَ نَصْرًا مُؤَزَّرًا. ثُمَّ لَمْ يَنْشَبْ وَرَقَةُ أَنْ تُوُفِّيَ،
 (রাসূল (সা.) এর প্রতি সর্বপ্রথম যে ওহী আসে, তখন হযরত জিব্রাঈল (আ.) কে দেখে রাসূল (সা.) ভীতসন্ত্রস্হ হন)....অতঃপর হযরত খাদিজা (রা.) তাকে (ওয়ারাকাকে) বললেন, হে চাচাতো ভাই! আপনার ভাতিজার কথা শুনুন।’ ওয়ারাকা তাকে জিজ্ঞেস করলেন, ‘ভাতিজা! তুমি কী দেখ? রাসূলুল্লাহ (সা.) যা দেখেছিলেন, সবই খুলে বললেন। তখন ওয়ারাকা তাকে বললেন, ইনি (জিব্রাঈল) হলেন সে দূত, যাকে আল্লাহ মূসা (আ.) এর কাছে পাঠিয়ে ছিলেন। আফসোস! আমি যদি সেদিন যুবক থাকতাম। আফসোস! আমি যদি সেদিন জীবিত থাকতাম, যেদিন তোমার কওম তোমাকে বের করে দেবে।’ রাসূলুল্লাহ (সা.) (দেশের প্রতি অবাধ ভালোবাসার থাকার দরুন) বললেন, ‘তারা কি আমাকে বের করে দেবে? তিনি বললেন, হ্যাঁ, অতীতে যিনিই তোমার মতো কিছু নিয়ে এসেছে, তার সঙ্গেই শত্রুতা করা হয়েছে। সেদিন যদি আমি বেঁচে থাকি, তবে তোমাকে প্রবলভাবে সাহায্য করব। এর কিছুদিন পর ওয়ারাকা (রা.) ইন্তিকাল করেন...। সহীহ বুখারী-১/৭, হাদীস-০৩।

০২. পবিত্র মক্কা শরীফ থেকে বিদায়ের প্রাক্কালে রাসূলে কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার প্রতি ভালোবাসার দরুন বলেছিলেন-
 سنن الترمذي ت شاكر (5/ 723)
3926 - حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ مُوسَى البَصْرِيُّ قَالَ: حَدَّثَنَا الفُضَيْلُ بْنُ سُلَيْمَانَ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عُثْمَانَ بْنِ خُثَيْمٍ قَالَ: حَدَّثَنَا سَعِيدُ بْنُ جُبَيْرٍ، وَأَبُو الطُّفَيْلِ، عَنْ ابْنِ عَبَّاسٍ، قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ لِمَكَّةَ: «مَا أَطْيَبَكِ مِنْ بَلَدٍ، وَأَحَبَّكِ إِلَيَّ، وَلَوْلَا أَنَّ قَوْمِي أَخْرَجُونِي مِنْكِ مَا سَكَنْتُ غَيْرَكِ»
হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে  আব্বাস (রা.) থেকে বর্ণিত। রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘‘ভূখন্ড হিসেবে তুমি কতই না উত্তম, আমার কাছে তুমি কতই না প্রিয়! যদি আমার স্বজাতি আমাকে বের করে না দিতো, তবে কিছুতেই আমি অন্যত্র বসবাস করতাম না।’’  তিরমিযী-৫/৭২৩, হাদীস : ৩৯২৬। হাদীসটি সহীহ

প্রিয় পাঠক! মক্কা নগরী তো শুধু আল্লাহর রাসূলের জন্মভূমিই ছিল না, এ তো ঐ পবিত্র ভূখন্ড, যেখানে আল্লাহর ঘর প্রতিষ্ঠিত। পরবর্তীতে যখন তিনি মদীনা মুনাওয়ারাকে স্থায়ী আবাসভূমি হিসেবে গ্রহণ করেন, তখন বিভিন্ন সময়ে বিভিন্নভাবে মদীনার প্রতি তাঁর হৃদয়ের অনুরাগ প্রকাশ করতেন।

০৩. যেমন- অন্য এক হাদীসে এসেছে-
 صحيح البخاري (3/ 7)
1802 - حَدَّثَنَا سَعِيدُ بْنُ أَبِي مَرْيَمَ، أَخْبَرَنَا مُحَمَّدُ بْنُ جَعْفَرٍ، قَالَ: أَخْبَرَنِي حُمَيْدٌ، أَنَّهُ سَمِعَ أَنَسًا رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ، يَقُولُ: «كَانَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ إِذَا قَدِمَ مِنْ سَفَرٍ، فَأَبْصَرَ دَرَجَاتِ المَدِينَةِ، أَوْضَعَ نَاقَتَهُ ، وَإِنْ كَانَتْ دَابَّةً حَرَّكَهَا»
 হযরত আনাস (রা.) বলেন, নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন কোনো সফর থেকে ফিরে আসতেন, দূর থেকে মদীনার জনপদ নজরে আসতেই তিনি তাঁর উটনীর গতি বাড়িয়ে দিতেন, অথবা কোনো চতুষ্পদ জন্তুর উপর থাকলে তাকে নাড়াতে থাকতেন। বস্তুতঃ মদীনার প্রতি ভালবাসার দরুনই তিনি এমনটি করতেন।  বুখারী-৩/৭, হাদীস-১৮০২।

০৪. অন্য এক হাদীসে এসেছে-
 صحيح البخاري (4/ 35)
2889 - حَدَّثَنَا عَبْدُ العَزِيزِ بْنُ عَبْدِ اللَّهِ، حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ جَعْفَرٍ، عَنْ عَمْرِو بْنِ أَبِي عَمْرٍو، مَوْلَى المُطَّلِبِ بْنِ حَنْطَبٍ، أَنَّهُ سَمِعَ أَنَسَ بْنَ مَالِكٍ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ، يَقُولُ: خَرَجْتُ مَعَ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، إِلَى خَيْبَرَ أَخْدُمُهُ، فَلَمَّا قَدِمَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، رَاجِعًا وَبَدَا لَهُ أُحُدٌ، قَالَ: «هَذَا جَبَلٌ يُحِبُّنَا وَنُحِبُّهُ» ثُمَّ أَشَارَ بِيَدِهِ إِلَى المَدِينَةِ، قَالَ: «اللَّهُمَّ إِنِّي أُحَرِّمُ مَا بَيْنَ لاَبَتَيْهَا، كَتَحْرِيمِ إِبْرَاهِيمَ مَكَّةَ، اللَّهُمَّ بَارِكْ لَنَا فِي صَاعِنَا وَمُدِّنَا»
 হযরত আনাস রা. বলেন, ‘আমি খেদমতের নিয়তে রাসূল (সা.) এর সাথে খায়বার অভিযানে গেলাম। অতঃপর যখন অভিযান শেষে নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ফিরে এলেন। উহুদ পাহাড় তাঁর দৃষ্টিগোচর হল, তিনি বললেন, এই পাহাড় আমাদেরকে ভালবাসে, আমরাও একে ভালবাসি। অতপর তিনি মদীনার দিকে হাত দ্বারা ইশারা করলেন এবং নিম্ম দোয়াটি বললেন-«اللَّهُمَّ إِنِّي أُحَرِّمُ مَا بَيْنَ لاَبَتَيْهَا، كَتَحْرِيمِ إِبْرَاهِيمَ مَكَّةَ، اللَّهُمَّ بَارِكْ لَنَا فِي صَاعِنَا وَمُدِّنَا» বুখারী-৪/৩৫, হাদীস-২৮৮৯।

প্রিয় পাঠক! স্বদেশের প্রতি মানবমনের এই স্বভাবজাত অনুরাগকে ইসলাম সমর্থন করে। কিন্তু এই দেশপ্রেম যদি সীমা অতিক্রম করে অহমিকা কিংবা আত্মকেন্দ্রিকতার জন্ম দেয়, অথবা যদি মানুষকে অন্ধত্ব ও উগ্রতার দিকে নিয়ে যায় এবং আল্লাহর সৃষ্টি অন্য কোনো দেশ বা ভূখন্ডের বিরুদ্ধে অন্যায় বিদ্বেষের জন্ম দেয়, তাহলে ইসলাম কখনোই তা সমর্থন করে না।

❁❀    নিজের দেশের প্রতি ভালবাসার বিষয়টি যথাস্থানে ঠিকই আছে। কিন্তু তার সঙ্গে এটাও মনে রাখতে হবে যে, ভৌগোলিক পরিচয়কে ইসলাম সম্মান-মর্যাদার মানদন্ড গণ্য করেনি। ইসলামের কাছে মর্যাদার মানদন্ড হচ্ছে তাকওয়া ও খোদাভীতি। এই তাকওয়ার গুণে যে ভূষিত হবে সেই সম্মান-মর্যাদার অধিক উপযুক্ত বলে বিবেচিত হবে। চাই সে কোনো অখ্যাত দেশের বাসিন্দাই হোক না কেন।  

০৫. আল্লাহ তাআলা কোরআনে ইরশাদ করেন-
وَجَعَلْنَاكُمْ شُعُوبًا وَقَبَائِلَ لِتَعَارَفُوا إِنَّ أَكْرَمَكُمْ عِنْدَ اللَّهِ أَتْقَاكُمْ الخ [الحجرات: 13]
 নিশ্চয়ই আমি তোমাদেরকে বিভিন্ন জাতি ও গোত্রে বিভক্ত করেছি যাতে তোমরা একে অপরকে চিনতে পারো। আর তোমাদের মধ্যে আল্লাহর কাছে সবচেয়ে মর্যাদাবান সে, যে আল্লাহকে সর্বাধিক ভয় করে...। সূরা হুজুরাত- ১৩। 
০৬. রাসূলে কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আরো বলেন-
 مسند أحمد مخرجا (38/ 474)
23489 - حَدَّثَنَا إِسْمَاعِيلُ، حَدَّثَنَا سَعِيدٌ الْجُرَيْرِيُّ، عَنْ أَبِي نَضْرَةَ، حَدَّثَنِي مَنْ سَمِعَ خُطْبَةَ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فِي وَسَطِ أَيَّامِ التَّشْرِيقِ فَقَالَ: «يَا أَيُّهَا النَّاسُ، أَلَا إِنَّ رَبَّكُمْ وَاحِدٌ، وَإِنَّ أَبَاكُمْ وَاحِدٌ، أَلَا لَا فَضْلَ لِعَرَبِيٍّ عَلَى عَجَمِيٍّ، وَلَا لِعَجَمِيٍّ عَلَى عَرَبِيٍّ، وَلَا أَحْمَرَ عَلَى أَسْوَدَ، وَلَا أَسْوَدَ عَلَى أَحْمَرَ، إِلَّا بِالتَّقْوَى....الخ
 ‘‘হে লোকসকল! জেনে রেখো, তোমাদের প্রতিপালক একজন, তোমাদের পিতা একজন। জেনে রেখো, অনারবের উপর আরবের, আরবের উপর অনারবের কোনো শ্রেষ্ঠত্ব নেই। সাদার উপর কালোর, কালোর উপর সাদার কোনো শ্রেষ্ঠত্ব নেই। তবে তাকওয়ার ভিত্তিতে একজন আরেকজনের উপর শ্রেষ্ঠত্ব লাভ করতে পারবে...।’’ মুসনাদে আহমদ- ৩৮/৪৭৪, হাদীস-২৩৪৮৯। আল্লামা ইবনু তাইমিয়্যা (রহ.) বলেন-وفي حديث آخر رويناه بإسناد صحيح হাদীসটি সহীহ। এক্তেদাউস সিরাতিল মুস্তাকিম-১/৪১২।

০৭. হযরত আবু দারদা রা.-এর এক চিঠির উত্তরে সালমান (রা.) লিখেছিলেন-
 موطأ مالك رواية أبي مصعب الزهري (2/ 519)
3022 - حدثنَا أَبُو مُصْعَبٍ، قَالَ: حَدَّثَنَا مَالِكٌ، عَنْ يَحْيَى بْنِ سَعِيدٍ , أَنَّ أَبَا الدَّرْدَاءِ كَتَبَ إِلَى سَلْمَانَ الْفَارِسِيِّ: أَنْ هَلُمَّ إِلَى الأََرْضِ الْمُقَدَّسَةِ , فَكَتَبَ إِلَيْهِ: إِنَّ الأََرْضَ لاَ تُقَدِّسُ أَحَدًا، وَإِنَّمَا يُقَدِّسُ الإِنْسَانَ عَمَلُهُ
....الخ
 ‘‘কোনো ভূখন্ড কাউকে পবিত্র করে না। মানুষকে পবিত্র করে তার আমল।’’ মুয়াত্তা মালিক-২/৫১৯, হাদীস-৩০২২। মোল্লা আলী ক্বারী ও আল্লামা আজলুনী বলেন এটি ‘মুনকাতে’’ বর্ণনা। আল আসরারুল মারুফূয়া-৯৬, হাদীস-৩৯, কাশফুল খাপা-১/১৩২, হাদীস-৩২১।
 

প্রিয় পাঠক! দেশপ্রেম মানুষের স্বভাবজাত বিষয়। ইসলাম সেটাকে গুরুত্ব দিয়েছে। কিন্তু ন্যায় ও ভারসাম্যের ধর্ম ইসলামে অন্য সকল বিষয়ের মতো এ বিষয়েও নীতি ও বিধান দান করেছে, যা মুমিনকে সকল সীমালঙ্ঘন ও প্রান্তিকতা থেকে রক্ষা করে। তাই আমরাও সঠিক পন্থা অনুসারে নিজ জম্মভূমির ভালোবাসায় মেতে উঠার চেষ্টা করি। আল্লাহ তায়ালা আমাদের সকলকে তাওফীক দান করুন। আমীন

✍  ইতি মুফতী মো. ছানা উল্লাহ

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন