শনিবার, ১০ জানুয়ারী, ২০১৫

“ঈমান ছেড়ে কুফুরীর মাঝে প্রবেশের একটি সুক্ষ পন্থা”

“ঈমান ছেড়ে কুফুরীর মাঝে প্রবেশের একটি সুক্ষ পন্থা” 

এই বিষয়টি আমাদের মাঝে খুব প্রচলন, যে কাউকে নোয়াখাইল্লা, বরিশাইল্লা ইত্যাদি গোত্রের নামগুলোকে ব্যাঙ করে গাল-মন্দ করা, এর চেয়েও দূঃখের বিষয় হচ্ছে যে, আমরা এটাকে কোন গুনাহের কাজ বলেও মনে করছি না। আসলে এটিযে কত জঘন্য পাপ আপনি হয়ত বা আজকেই প্রথম শুনবেন?


     রাসূল (স্বল্লাল্ল-হু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এ ধরনের লোকগুলোকে কাফের বলে আক্ষায়িত করেছেন (নাউযুবিল্লাহ আল্লাহ)। মহান রব্বুল ‘আলামীন আমাদেরকে এ বিষয়গুলো জেনে তার উপর পরিপূর্ণ ‘আমল করার তাউফীক্ব দান করুন। আমীন...

বিস্তারিত নিম্নে বর্ণনা করা হলোঃ

১. মহান আল্লাহ তা‘আলা তার পবিত্র গ্রন্থ আল-কুরআনে বলেনঃ

{ يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا لَا يَسْخَرْ قَوْمٌ مِنْ قَوْمٍ عَسَى أَنْ يَكُونُوا خَيْرًا مِنْهُمْ وَلَا نِسَاءٌ مِنْ نِسَاءٍ عَسَى أَنْ يَكُنَّ خَيْرًا مِنْهُنَّ وَلَا تَلْمِزُوا أَنْفُسَكُمْ وَلَا تَنَابَزُوا بِالْأَلْقَابِ بِئْسَ الِاسْمُ الْفُسُوقُ بَعْدَ الْإِيمَانِ وَمَنْ لَمْ يَتُبْ فَأُولَئِكَ هُمُ الظَّالِمُونَ } [الحجرات: 11]

অর্থাত- হে ঈমানদারগণ তোমরা একটি কাওম/গোত্র যাতে করে অন্য কাওম/গোত্রকে নিয়ে উপহাস না কর, হতে পারে উপহাসকৃত গোত্রই উত্তম-আর যারা এহেন কাজ থেকে তাওবা না করে তারাই যালিন/অত্যাচারী। (সূরা হুজুরাত-আয়াত নং-১১)

২. মুসলিম শরীফ এর বর্ণনা-

صحيح مسلم (1/ 82)
121 - (67) وَحَدَّثَنَا أَبُو بَكْرِ بْنُ أَبِي شَيْبَةَ، حَدَّثَنَا أَبُو مُعَاوِيَةَ، ح وَحَدَّثَنَا ابْنُ نُمَيْرٍ - اللَّفْظُ لَهُ - حَدَّثَنَا أَبِي، وَمُحَمَّدُ بْنُ عُبَيْدٍ كُلُّهُمْ عَنِ الْأَعْمَشِ، عَنْ أَبِي صَالِحٍ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: " اثْنَتَانِ فِي النَّاسِ هُمَا بِهِمْ كُفْرٌ: الطَّعْنُ فِي النَّسَبِ وَالنِّيَاحَةُ عَلَى الْمَيِّتِ "

অর্থাত- হযরত আবূ হুরায়রা (রদ্বিঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন রসূল (স্বঃ) বলেছেন, মানুষের মাঝে দু‘ধরনের মানুষ আছে যারা কুফরীর সাথে সম্পৃক্ত,
     (এক) যারা গোত্র নিয়ে তিরষ্কার করে,
     (দুই) মৃত ব্যক্তির উপর জাহেলী যুগের মত কান্না করে। (সহীহ মুসলিম হাদীস নং-১২১)

৩. সহীহ বুখারীর বর্ণনা-

صحيح البخاري (1/ 15)
30 - حَدَّثَنَا سُلَيْمَانُ بْنُ حَرْبٍ، قَالَ: حَدَّثَنَا شُعْبَةُ، عَنْ وَاصِلٍ الأَحْدَبِ، عَنِ المَعْرُورِ بْنِ سُوَيْدٍ، قَالَ: لَقِيتُ أَبَا ذَرٍّ بِالرَّبَذَةِ، وَعَلَيْهِ حُلَّةٌ، وَعَلَى غُلاَمِهِ حُلَّةٌ، فَسَأَلْتُهُ عَنْ ذَلِكَ، فَقَالَ: إِنِّي سَابَبْتُ رَجُلًا فَعَيَّرْتُهُ بِأُمِّهِ، فَقَالَ لِي النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «يَا أَبَا ذَرٍّ أَعَيَّرْتَهُ بِأُمِّهِ؟ إِنَّكَ امْرُؤٌ فِيكَ جَاهِلِيَّةٌ،

অর্থাত-হযরত মায়রূর ইবনে সুয়াইদ (রদ্বিঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি হযরত আবূ জর গীফারী (রদ্বিঃ)-এর সাথে জাবাদাহ নামক স্থানে সাক্ষাত হয়, তখন আমি তার গায়ে একটি চাদর দেখি হুবহু তার গোলামের গায়েও একই ধরনের চাদর তখন আমি তাকে এর কারন সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করলে তিনি বলেন, আমি একজন মানুষকে গালি দিয়েছি তার মাকে তিরষ্কার করে।
(বুখারীতে এই হাদীসটির বিস্তারিত ব্যাখ্যা নেই অন্য কিতাবগুলিতে আছে যেমন, শু‘আবুল ঈমান-৭/১৩০ হা-৪৭৭২,)
     তিনি ছিলেন হযরত বেলাল (রদ্বিঃ) যাকে আবূ যার গীফারী (রদ্বিঃ) গালী দিয়েছেন, আর তা ছিল `হাবশী ‘ শব্দ বলে আর হাবশা একটি গোত্রের নাম অথবা কেউ কেউ বলেছেন, কালো মহিলার বাচ্চা বলে, তার অর্থও প্রথম অর্থের মত অর্থাত হাবশা বুঝিয়েছেন) অতপর রসূল (স্বঃ)-এর কাছে এই বিচার যাওয়ার পর রসূল (স্বঃ) হযরত আবূ যর গীফারী (রদ্বিঃ)-এর মত জালিলুল কদর সাহাবীকে বলেন, তুমি এমন একজন লোক যার মাঝে আজও জাহেলী যুগের স্বভাব রয়ে গেছে। (বুখারী-১/১৫, হাদীস-৩০)

সন্মানীত পাঠক বৃন্দু! এই কুরআনের আয়াত আর হাদীস দুইটি পড়ার দ্বারা নিশ্চয় আপনি বুঝেছেন যে, কোন গোত্র বংশ ইত্যাদি নিয়ে গাল-মন্দ বা তিরষ্কার করা জগন্য ধরনের পাপ।
আল্লাহ তায়ালা আমাদেরকে এগুলো বুঝে আমল করা তাওফীক দান করুন। আমীন

(আল-কুরআন আর সহীহ বুখারী ও মুসলিমের হাদীস দ্বারা প্রমান করার কারনে আমি অন্য কোন কিতাব থেকে প্রমান দিলাম না, না হয় আরো অসংখ্য প্রমান আমি রিচাস করে বের করে রেখেছি।)

মুফতী মো, ছানা উল্লাহ

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন