সোমবার, ১৫ জুন, ২০১৫

আর কত....!!! আহলে হাদীসদের ফেৎনা এখন মাহে রমজানে আল্লাহর রহমত, মাগফেরাত ও নাজাত নিয়েও..

আর কত....!!!
আহলে হাদীসদের ফেৎনা এখন মাহে রমজানে আল্লাহর রহমত, মাগফেরাত ও নাজাত নিয়েও..


❖ আমাদের সমাজে মাহে রমজান সম্পর্কে নিন্ম হাদীসটি খুব প্রসিদ্ধ, কিন্তু সাম্প্রতিক কালে আমাদের আহলে হাদীস ভাইগণ না বুঝেই ফেৎনা সৃষ্টি করছে আর বলছে এটি জাল হাদীস। দেখুন হাদীসটি-
❖ صحيح ابن خزيمة (3/ 191)
1887 - ثنا عَلِيُّ بْنُ حُجْرٍ السَّعْدِيُّ، ثنا يُوسُفُ بْنُ زِيَادٍ، ثنا هَمَّامُ بْنُ يَحْيَى، عَنْ عَلِيِّ بْنِ زَيْدِ بْنِ جُدْعَانَ، عَنْ سَعِيدِ بْنِ الْمُسَيِّبِ، عَنْ سَلْمَانَ قَالَ: خَطَبَنَا رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فِي آخِرِ يَوْمٍ مِنْ شَعْبَانَ فَقَالَ: ..... وَهُوَ شَهْرٌ أَوَّلُهُ رَحْمَةٌ، وَأَوْسَطُهُ مَغْفِرَةٌ، وَآخِرُهُ عِتْقٌ مِنَ النَّارِالخ
[التعليق] 1887 - قال الأعظمي: إسناده ضعيف علي بن زيد بن جدعان ضعيف


অর্থ : হযরত সালমান ফারসী (রা.) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূল (সা.) শাবান মাসের শেষ দিন আমাদের মাঝে খতিব হিসেবে দাঁড়ালেন এবং বললেন (মাহে রমজান) এমন একটি মাস যার প্রথম ভাগ রহমাত, মধ্যবর্তী ভাগ মাগফেরাত/ক্ষমা আর শেষ ভাগে জাহান্নাম থেকে মুক্তি দেয়া হয়। ইবনে খুজাইমা-৩/১৯১, হাদীস-১৮৮৭, শুয়াবুল ঈমান-৫/২২৩, হাদীস-৩৩৩৬। (হাদীসটি অনেক দৈঘ এখানে সংক্ষেপে উল্লেখ করা হলো।)

❀ হাদীসটির মান ❀
বিখ্যাত মুহাদ্দেস আল্লামা মুস্তফা আল আজমী ইবনে খুজাইমার তাহকীক করতে গিয়ে বলেন, উক্ত হাদীসটি যয়ীফ (যা ফাজায়েলের ক্ষেত্রে আমল যোগ্য) কেননা উক্ত হাদীসের সূত্রের মাঝে একজন বর্ণনাকারী হলেন ‘‘আলী ইবনে যায়েদ ইবনে জুদআন’’ তিনি একজন দুর্বল বর্ণনাকারী। তাই হাদীসটি যয়ীফ।

❏ এছাড়াও ইমাম আহমদ ইবনে আব্দুল্লাহ আল ইজলী (রহ.) তার সম্পর্কে বলেন- وَقَال أحمد بن عَبْد اللَّهِ العجلي : يكتب حديثه তার হাদীসগুলো সংগ্রহ করার মত আর অনত্র তিনি বলেন-لا بأس به. তার মাঝে কোন সমস্যা নেই।  ইমাম ইয়াকুব ইবনে শায়বা (রহ.) বলেন-وَقَال يعقوب بْن شَيْبَة: ثقة، صالح الحديث তিনি নির্ভরযোগ্য, হাদীসের ক্ষেত্রে সৎ আর বিখ্যাত ইমাম, ইমাম তিরমিযী (রহ.) বলেন-وَقَال التِّرْمِذِيّ  : صدوق তিনি সত্যবাদী। তাহযীবুল কামাল-২০/৪৩৯।
কিন্তু আমাদের আহলে হাদীস ভাইগণ জাল আর যয়ীফ হাদীস এর পার্থক্য বুঝে না। প্রকৃত পক্ষে জাল কোন ভাবেই হাদীস না তা রাসূল (সা.) এর উপর মিথ্যারোপ শুধু। কিন্তু যয়ীফ হাদীস যা রাসূল (সা.) থেকে সাব্যস্ত কিন্তু সূত্রে মাঝে কোন বর্ণনাকারীর কারণে তা যয়ীফ হয়েছে।

উল্লেখ্য যে, এ বিষয়ে হুবহু অর্থে হযরত আবূ হুরায়রা (রা.) থেকে অন্য একটি হাদীস বর্ণিত হয়েছে । যা আল্লামা উকাইলি (রহ.) তার ‘‘আয যুয়াফাউল কাবীরের-২/১৬২ এর মাঝে ও আল্লামা ইবনে আদী (রহ.) আল কামেলের-৩/৩১১ এর মাঝে, ইবনু আবীদ দুনিয়া তার রচিত ‘‘ফাযায়েলে রামজান’’ এর মাঝে ও খতিবে বগদাদী ‘‘আল মু’দেহ’’ এর-২/১৪৭ এর মাঝে عن سلام بن سوار عن مسلمة بن الصلت عن الزهري ، عن أبي سلمة عن أبي هريرة এই সনদে উল্লেখ করেছেন।
এই সনদ এর মাঝেও مسلمة بن الصلت একজন অধিক দুর্ভল বর্ণনাকারী যার কারণে এই হাদীসটিও যয়ীফ। তার জীবনি সর্ম্পকে দেখুন ‘‘আল জারহু ওয়াত তাদীল’’-৮/২৬৯ ও লিসানুল মিযান-৬/৩৩।

মহান আল্লাহ তায়ালা আমাদেরকে সঠিক দ্বীন বুঝে আমল করার তাওফীক দান করুন। আমীন

ইতি মুফতী মো. ছানা উল্লাহ

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন