বৃহস্পতিবার, ৫ ফেব্রুয়ারী, ২০১৫

নামাযের মাঝে নারী পুরুষের ভিন্নতা. .... 3য় পর্ব

February 2, 2015 at 9:59pm
❀ 3য় পর্ব ❀ 





দেখুন হাদীস ও আসারের আলোকে নারী পুরুষের নামাযের মাঝে পার্থক্য ✪  


  ✔ আজকের আলোচনা সরাসরী রাসূল (সা.) এর নির্দেশ বা সংশোধন যে, মহিলারা  জড়সড় হয়ে অঙ্গের সাথে অঙ্গ মিলিয়ে নামায আদায় করবে। (পুরুষদের বেতিক্রম) ।  

❀ পুরুষেরা যেমন নামাযের মাঝে জড়সড় হয়ে নামায আদায় করেন না, অর্থাৎ এক অঙ্গ থেকে অন্য অঙ্গ পৃথক রাখে। কিন্তু এই বিধানটি মহিলাদের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য না। বরং মহিলারা  জড়সড় হয়ে অঙ্গের সাথে অঙ্গ মিলিয়ে নামায আদায় করবে  এ বিষয়ে সরাসরী রাসূল (সা.) এর নির্দেশ বা সংশোধন এর দলীল-


المراسيل لأبي داود (ص: 117) 87   - حَدَّثَنَا سُلَيْمَانُ بْنُ دَاوُدَ، حَدَّثَنَا ابْنُ وَهْبٍ، أَخْبَرَنَا حَيْوَةُ بْنُ شُرَيْحٍ، عَنْ سَالِمِ بْنِ غَيْلَانَ [ص:118]، عَنْ يَزِيدَ بْنِ أَبِي حَبِيبٍ، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مَرَّ عَلَى امْرَأَتَيْنِ تُصَلِّيَانِ فَقَالَ: «إِذَا سَجَدْتُمَا فَضُمَّا بَعْضَ اللَّحْمِ إِلَى الْأَرْضِ فَإِنَّ الْمَرْأَةَ لَيْسَتْ فِي ذَلِكَ كَالرَّجُلِ»


‘‘হযরত ইয়াযীদ ইবনে আবী হাবীব (রহ.) বলেন, একবার রাসূলুল্লাহ (সা.) নামাযরত দুই মহিলার পাশ দিয়ে যাচ্ছিলেন। তখন তাদেরকে (সংশোধনের উদ্দেশ্যে) বললেন, যখন সিজদা করবে তখন শরীর যমীনের সাথে মিলিয়ে দিবে। কেননা মহিলারা এ ক্ষেত্রে পুরুষদের মত নয়।’’ 

কিতাবুল মারাসিল, লিল ইমাম আবূ দাঊদ, পৃ.-117 হাদীস নং-87, সুনানুল কুবরা লিল বায়হাকী-2/315, হাদীস-৩২০১ , মারেফাতুস সুনানে ওয়াল আসার লিল বায়হাকী-3/336, হাদীস নং-1০৫0)

 হযরত ইয়াযীদ ইবনে আবী হাবীব হলেন, একজন নির্ভরযোগ্য তাবেয়ী, তিনি 93 হিজরীতে জন্ম গ্রহণ করেন এবং 128 হিজরীতে মৃতু বরণ করেন। দেখুন তাহযীবুত তাহযীব-11/318, সিলসিলাতু আহাদীসিস যয়ীফা-6/163 হাদীস নং-2652। 


 এই হাদীসটি মুরসাল হাদীস এর গ্রহণযোগ্য প্রকারের অন্তর্ভুক্ত তাই এ হাদীস প্রমাণ যোগ্য। এছাড়াও এই হাদীসটির সকল বর্ণনাকারী নির্ভরযোগ্য।আর কিছু কিছু মুহাদ্দেসীনগণ মুরসাল হাদীসকে যয়ীফ হাদীস এর অন্তুর্ভুক্ত করে থাকেন, যদি আমরা তাদের মত অনুসারেও আমল করে থাকি তা হলেও কোন সমস্যা নেই কেননা এর সমর্থনে  আরো কিছু সহীহ হাদীস রয়েছে।পক্ষান্তরে এগুলোর সাথে বিরোধপূর্ণএকটি হাদীস কোথাও পাওয়া যায় না।


✔ যে সমস্ত মুহাদ্দীসগণ উল্লেখিত হাদীসটিকে প্রমাণ যোগ্য বলে নিজ কিতাবে উল্লেখ করেছেন।✔
(বিশেষ উপহার কিছু সালাফী গ্রহণযোগ্য শায়খও এই হাদীসকে প্রমাণযোগ্য বলে নিজ কিতাবে উল্লেখ করেছেন)।

01। ইমাম আবূ দাউদ (রহ.)মৃত-275, দেখুন- কিতাবুল মারাসিল, পৃ.-117।
02। ইমাম বায়হাকী (রহ.)মৃত-458, তার কিতাবে উল্লেখিত হাদীসটি উল্লেখ করার পর বলেন- وَهُوَ أَحْسَنُ مِنَ الْمَوْصُولِينَএই হাদীসটি সূত্রগত সংযুক্তির দিক থেকে খুবই উন্নত। দেখুন- সুনানুল কুবরা লিল বায়হাকী-2/315, হাদীস-৩২০১।
03। জারহ ও তাদিলের বিখ্যাত ইমাম হাফেজ জাহাবী (রহ.)মৃত-748, ও এ হাদীসকে দলীল স্বরূপ ‍উল্লেখ করেছেন। দেখুন-আল মুহাজ্জাব-2/662।
04। ইমাম ইবনুল মুলকীন (রহ.)মৃত-804, ও হাদীসটিকে প্রমাণ স্বরূপ উল্লেখ করেছেন-তোহফাতুল মুহতাজ-1/318।
05। হাফেজ ইবনে হাজার আসকালানী (রহ.)মৃত-852। দেখুন-আত তালখিসুল হাবীর-1/394।
06। আল্লামা সুনয়ানী (রহ.)মৃত-1182। দেখুন-আল ইদাতু আলাল আহকাম-02/178।
07।  আহলে হাদীসের বিখ্যাত মহাগুরু  নওয়াব সিদ্দীক হাসান খান। দেখুন-আওনুল বারী-1/520।
08। ও সালাফীগণের বিখ্যাত মুহাদ্দীস  মুহাম্মদ ইবনে ইসমাঈল আমীর ইয়ামানী (রহ.) মৃত-1182।
দেখুন সুবুলুস সালাম শারহু বুলুগিল মারাম-1/351,352।


সালাফীদের আপত্তি নং-01 : তারা বলে উল্লেখিত হাদীসটি প্রমাণযোগ্য নয়। কেননা উল্লেখিত হাদীসটি মুরসাল। 


✏ আমাদের জবাব : প্রথমত আমরা মুরসাল হাদীস এর সংজ্ঞা জেনে নিয়-الْمُرْسل حَدِيث التَّابِعِيّ الْكَبِير الَّذِي لَقِي جمَاعَة من الصَّحَابَة وَجَالسهمْ  আর তা হলো মুরসাল হাদীস বলা হয়, যা এমন কোন তাবেয়ী থেকে বর্ণিত যিনি সাহাবায়ে কেরামের এক বড় জামাতের সাক্ষাৎ পেয়েছেন, এবং তাদের সংশ্রবও অর্জন করেছেন। আর এ ধরনের হাদীস গ্রহণযোগ্য কি না ? এ বিষয়ে মুহাদ্দীসগণের মতানৈক্য রয়েছে, মুরসালের বিভিন্ন প্রকারভেদের দিকে লক্ষ্য করে। আর উল্লেখিত হাদীসটি মুরসালের গ্রহণযোগ্য প্রকারের অন্তর্ভুক্ত, কেননা ইমাম আবূ দাঊদ (রহ.) এর মত বিখ্যাত মুহাদ্দীস যিনি সিহাহ সিত্তা এর ছয় জন লেখকের অন্তুর্ভুক্ত ।  তিনি তার কিতাবের মাঝে এই হাদীসটি উল্লেখ করার পর যয়ীফ বলে কোন মন্তব্য করেন নি। তাই আমরা হাদীসটিকে নির্ধিদায় প্রমাণ স্বরূপ গ্রহণ করতে পারি এতে কোন সমস্যা নেই। দেখুন এই সংক্রান্ত আরো বিস্তারিত আলোচনা হাদীস এর নিয়মাবলী বিষয়ে সব চেয়ে নির্ভরযোগ্য কিতাব মুকাদ্দামায়ে ইবনে সালাহ-83-88। 


সালাফীদের আপত্তি নং-02 : তারা বলে উল্লেখিত হাদীসটিকে ইমাম বায়হাকী, ইমাম আবূ দাউদ (রহ.) (যিনি মুলত হাদীসটি সংকলন করেছেন) তার থেকে সংগ্রহ করার সময় বলেছেন, হাদীসটি ‘‘মুনকাতেয়’’ অর্থাৎ ‘‘মুরসাল’’ হাদীস নয়। আর মুনকাতেয় হাদীস প্রমাণ হতে পারে না। তাহলে এই হাদীস কি করে প্রমাণযোগ্য?

 ✏ আমাদের জবাব 01: দেখুন উপরে আমি হাদীসটি তিনটি কিতাবে উল্লেখ আছে বলে প্রমাণ দিয়েছি, আর আমার সাথে এ বিষয়ে সালাফীগণও একমত। তার মধ্য থেকে প্রথমটি ইমাম আবূ দাঊদ (রহ.) এর ‘কিতাবুল মারাসীল’(তথা মুরসাল হাদীসের কিতাব) আর বাকি দুটি ইমাম বায়হাকী (রহ.) এর কিতাব সালাফী ভাইগণ মনে হয় এ কথাটিও ভালো করে জানেন না যে, বাকি  দুটি কিতাব কার লিখিত?
এখন প্রশ্ন হলো- মুফতী সাহেব আপনি কি গায়েব জানেন যে তারা এ কিতাব দুটি কার লিখিত সে কথাটিও জানেন না?
আমি উত্তরে বলবো যদি তারা এ কথা জানতো তাহলে তারা কেন বলছে যে, ইমাম বায়হাকী তার বায়হাকীর মাঝে হাদীসটিকে ‘মুনকাতা’ বলেছেন? অথচ দ্বিতীয় কিতাবটিও ইমাম বায়হাকী (রহ.)এর তিনি ঐ কিতাবে তার সিদ্ধান্ত পরিবতন করে বলেন-

معرفة السنن والآثار للبيهقي - (3 / 236)1050 - وقد روينا عن يزيد بن أبي حبيب ، مرسلا : أن النبي صلى الله عليه وسلم ، مر على امرأتين تصليان ، فقال : « إذا سجدتما ، فضما بعض اللحم إلى الأرض ، فإن المرأة ليست في ذلك كالرجل »

আমি (ইমাম বায়হাকী) উক্ত হাদীসটিকে ইয়াযিদ ইবনে আবী হাবীব (রহ.) থেকে ‘মুরসাল’ স্বরূপ বর্ণনা করেছি যে, একবার রাসূলুল্লাহ (সা.) নামাযরত দুই মহিলার পাশ দিয়ে যাচ্ছিলেন। তখন তাদেরকে (সংশোধনের উদ্দেশ্যে)বললেন, যখন সিজদা করবে তখন শরীর যমীনের সাথে মিলিয়ে দিবে। কেননা মহিলারা এ ক্ষেত্রে পুরুষদের মত নয়।’’ মারেফাতুস সুনানে ওয়াল আসার লিল বায়হাকী-3/336, হাদীস নং-1০৫0)। তাহলে প্রিয় পাঠক সালাফী ভাইদের মুর্খতা আপনাদের সামেন স্পষ্ট হয়ে গেলো।

  ✏ আমাদের জবাব 02 : আর তাছাড়াও এই হাদীসটির মূল সংকলক হলেন ইমাম আবূ দাউদ, আর তার সংকলিত গ্রন্থ হলো ‘‘কিতাবুল মারাসি’’ (তথা মুরসাল হাদীস এর কিতাব) তাহলে হাদীসটি যে মুরসাল তা প্রত্যাখান কি করে করা সম্ভব? আসলে তারা সর্বকাজে এ ভাবেই সাধারণ মানুষদেরকে ধোকা দিয়ে থাকে।

 ✏ আমাদের জবাব 03: সালাফী ভাইদের নিকট অন্য দুটি উত্তর পছন্দ হয় কি না তা আমি জানি না? শেষ উত্তর হলো তাদের সব চেয়ে গ্রহণযোগ্য মুহাদ্দীস সালাফীদের মহাগুরু শায়খ নাসীর উদ্দীন আলবানীর। তিনি তার কিতাবের মাঝে উল্লেখিত হাদীসটি উল্লেখ করার পর বলেন-قلت: يعني مرسل আমি (আলবানী) বলতে চাই হাদীসটিমুরসাল। সিলসিলাতুজ যয়ীফা-6/163 হাদীস নং-2652। দেখুন প্রিয় পাঠক বৃন্দু তারা কতটা মুর্খ নিজেদের শায়খ এর কিতাবটিও পড়ে দেখেনি যে, শায়খ এ সম্পর্কে কি বলেছেন? তাহলে এখন ‘মুনকাতে’ বলে মিথ্যাচার করার কোন অর্থই রইলো না। আর হাদীসটি ‘মুরসাল’ তা দ্বিপ্রহরের ন্যায় স্পষ্ট।


❀ উল্লেখ্য যে, তারা হাদীসটিকে নিয়ে অনেক চেষ্ট চালিয়েছে যে, হাদীসটিকে কোন ভাবে ‘মুনকাতে’ সাব্যস্ত্ করা যায় কি না? যদি ‘মুনকাতো’ সাব্যস্ত্ করা যেতো তাহলে এই হাদীস প্রমাণ যোগ্য হতো না। আল্লাহ তাদের প্রকৃত চেহারা আপনারদের সামনে তুলে ধরার তাওফীক দান করেছেন। ইনশাআল্লাহ এ ধরনের হাজার উক্তিও যদি রাসূল (সা.) এর হাদীস এর উপর তারা উত্থাপন করে আমরা তা উপিস্থিত প্রতিহত করে তাদের কালো হাত ভেঙ্গে দিতে প্রস্তুত।


সালাফীদের আপত্তি নং-03 : তারা বলে উল্লেখিত হাদীসের একজন বর্ণনাকারী  সালেম বিন গাইলান তাকে ইমাম দারা কুতনী মাতরুক’ বা পরিত্যাক্ত বলেছেন তাই এই হাদীসটি প্রমাণ যোগ্য নয়। 

✏ আমাদের জবাব : চামচিকা যেমন দিনে বেলায় দেখতে পায় না, ঠিক সালাফী ভাইগণও তাদের বিরুদ্ধে কোন হাদীস আসলে সেই হাদীস এর বর্ণনাকারীদের জীবনীর কোন ভালো দিকও দেখতে পায় না। কেননা আমরা যদি রিজাল বা মুহাদ্দীসগণের জীবনী সংক্রান্ত কিতাবাদী দেখি তাহলে সালেম বিন গাইলান এর সম্পর্কে অনেক প্রশংসনীয় মন্তব্য পাওয়া যায়। যেমন দেখুন-

01।ইমাম আহমদ ইবনে হাম্বল (রহ.) তার পিতা থেকে বর্ণনা করেন যে, ما أرى به بأسا. আমি তার মাঝে কোন সমস্যাই দেখছি না।
02। ইমাম আবূ দাউদ (রহ.) বলেন, : لا بأس به.তার মাঝে কোন সমম্যা নেই।
03। ইমাম নাসাঈ (রহ.) বলেন তার মাঝে কোন সমস্যাই নেই।
04। আর ইমাম ইবনে হিব্বান (রহ.) তার ‘সিকাত’ বা নির্ভরযোগ্য বর্ণনাকারীদের তালিকায়ও তার নাম উল্লেখ করেছেন।
05। হাফেজ মুগলাতায়ী বলেন-وكان فقيها তিনি ফকীহ বা বুঝবান ছিলেন।
06। ইমাম ইবনে ইউনুস (রহ.) বলেন- তিনি  وهو عندي أصحআমার নিকট বিশ্বস্ত্।
07। ইমাম কিনদী (রহ.) যখনই তার আলোচনা করতেন তখন وصفه بالفقه তার ফেকহ বা জ্ঞানের দিক আলোচনা করতেন।
08। আর আবূ হাফস ইবনে সাহিন (রহ.) তাকে সিকা বা নিবর বর্ণনাকারীদের অন্তর্ভুক্ত করেছেন।
09। ইমাম ইবনে খালফুন (রহ.) ও তাকে সেকাহ বর্ণনাকারীদের অন্তর্ভুক্ত করেছেন।
10। ইমাম ইবনে বুকাইর (রহ.) বলেন- سالم بن غيلان ثقة সালেম ইবন গাইলান নিবরযোগ্য।
11। ইমাম ইজলী (রহ.) ও তাকে নিভরযোগ্য বলেছেন।
12। হাফেজ মিজ্জি (রহ.)মৃত-742, তাকে সিকা বা বিশ্বস্ত বলেছেন ইমাম বায়হাকীর উপর নিভর করে।

‘তাহজীবুল কামাল খণ্ড-10/168, জীবনী-2175। এবং মিজানুল ই’তেদাল-2/113 জীবনি নং-3057। আল জারহু ওয়াত তাদিল, জীবনি নং-808, আল কাজাত লিল কিনদী-319, তারীখুল কাবীর লিল বুখারী-জীবনি-2161, আস সিকাত লি ইবনে হিব্বান-1/148, সুয়ালাতুত দারা কুতনী লিল বারকানী-05, তাহযীবুত তাহযীব-2/04, আল কাশেফ-1799, তারীখুল ইসলাম-6/68, ইকমালু মুগলতায়ী-2/61, খোলাসাতুল খাজরীজি-2330, আল মুগনী-2306, নেহায়াতুত সুয়াল-108, আত তাহজীব-3/442। ইত্যাদী 

❏ এই পর্যন্ত এক ডজন ইমামের মতামত উল্লেখ করেছি যারা তাকে সেকাহ বা নিবরযোগ্য বলেছেন। তাহলে প্রিয় পাঠক আপনি নিজেই বলুন ইমাম দারা কুতনী কোন প্রমাণ ব্যতিত তাকে ‘মাতরুক’ বা পরিত্যাক্ত বলার দ্বারা কি কোন বর্ণনাকারীর বর্ণনা প্রত্যাখ্যান করা যায়? অথবা তাকে যয়ীফ বলা যাবে? নিশ্চয় না, আল্লাহ আমাদেরকে তাদের ফেৎনা থেকে হেফাজত করুন। আমীন


❁❀সর্ব শেষ আলোচনা সালেম ইবনে গায়লান এর বিষয়ে শায়খ আলবানীর মন্তব্য ❀❖❀



 সালাফী ভাইগণ বলেন, ইমাম দারা কুতনী তাকে মাতরুক বলেছেন তাই হাদীসটি যয়ীফ হয়ে গিয়েছে। দেখুন শায়খ নাসীর উদ্দীন আলবানী বলেন-من جرح الدارقطني، لأنه جرح غير مفسر যে সমস্ত ইমামগণ তাকে যয়ীফ বলেছেন তারা ইমাম দারা কুতনীর উপর নিভর করে বলেছেন। (আর দারা কুতনীর কথা প্রত্যাখিত) কেননা তিনি কোন ব্যাখ্যা ছাড়াই তাকে মাতরুক বা পরিত্যাক্ত বলেছেন। সিলসিলাতু আহাদিসীস যয়ীফা-6/164, হাদীস নং-2652।

✍ আর সবচেয়ে মজার বিষয় হলো যদি সালেম ইবনে গায়লান এর কারণে এই হাদীসটি যয়ীফ বা মাওজু হয়, তা হলে সে যেই সনদেই থাকুক না কেন ঐ হাদীস অবশ্যই যয়ীফ বা মাওজু হবে। এখন আমি আপনাদেরকে সিসাহ সিত্তা থেকে মাত্র দুইটি কিতাবের এমন দুইটি সনদ উল্লেখ করবো যেখানে সালেম ইবন গায়লান এই বর্ণনাকারী আছেন অথচ আলবানী সাহেব ঐ হাদীসগুলোকে যয়ীফ বলেন নি মাওজু বা জালতো দূরের কথা। বরং হাসান বলেছেন, অথাৎ প্রমাণ যোগ্য।

سنن أبي داود (4/ 259)4832 - حَدَّثَنَا عَمْرُو بْنُ عَوْنٍ، أَخْبَرَنَا ابْنُ الْمُبَارَكِ، عَنْ حَيْوَةَ بْنِ شُرَيْحٍ، عَنْ سَالِمِ بْنِ غَيْلَانَ، عَنِ الْوَلِيدِ بْنِ قَيْسٍ، عَنْ أَبِي سَعِيدٍ، أَوْ عَنْ أَبِي الْهَيْثَمِ، عَنْ أَبِي سَعِيدٍ، عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، قَالَ: «لَا تُصَاحِبْ إِلَّا مُؤْمِنًا، وَلَا يَأْكُلْ طَعَامَكَ إِلَّا تَقِيٌّ»
[حكم الألباني] : حسن

প্রথম থেকে শুরু করে চার নং বর্ণনাকারী হলেন-সালেম ইবনে গায়লান, আরবী লিখগুলো শেষ লাইন হলো আলবানী সাহেবের মন্তব্য তিনি হাদীসটিকে হাসান বলেছেন। আবূ দাউদ-4/259, হাদীস-4832।

سنن الترمذي ت شاكر (4/ 600)2395 - حَدَّثَنَا سُوَيْدُ بْنُ نَصْرٍ قَالَ: أَخْبَرَنَا ابْنُ المُبَارَكِ، عَنْ حَيْوَةَ بْنِ شُرَيْحٍ قَالَ: حَدَّثَنِي سَالِمُ بْنُ غَيْلَانَ، أَنَّ الوَلِيدَ بْنَ قَيْسٍ التُّجِيبِيَّ، أَخْبَرَهُ أَنَّهُ سَمِعَ أَبَا سَعِيدٍ الخُدْرِيَّ، قَالَ سَالِمٌ: أَوْ عَنْ أَبِي الهَيْثَمِ، عَنْ أَبِي سَعِيدٍ، [ص:601] أَنَّهُ سَمِعَ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَقُولُ: «لَا تُصَاحِبْ إِلَّا مُؤْمِنًا، وَلَا يَأْكُلْ طَعَامَكَ إِلَّا تَقِيٌّ»: هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ إِنَّمَا نَعْرِفُهُ مِنْ هَذَا الْوَجْهِ
[حكم الألباني] : حسن

এ হাদীসটির মাঝেও চার নং বণনাকারী হলেন সালেম ইবনে গায়লান। অথচ আলবানী সাহেব হাদীসটিকে হাসানবলেছেন। তিরমিযী-4/600, হাদীস-2395।

 আচ্ছা সালাফী ভাইগণ এখন এই হাদীসগুলোর কি জবাব দিবেন? যেখানে সালেম ইবন গায়লান থাকা সত্ত্বেও আলবানী সাহেব এহাদীস দুটিকে হাসান বা প্রমাণযোগ্য বলেছেন? আমি জানি তারা দুটি উত্তরের যে কোন একটি দিবেন!!!!

❶। আমরা কোন শায়খ মানি না, কিসের আলবানী......?

❷। আর প্রথমটি না দিলে আরেকটি আছে, যা হাদীসের মাঝে মুনাফেক এর স্বভাব বলে উল্লেখ হয়েছে..... তা হলো গালি..

 আল্লাহ আমাদের সকলকে সঠিক দ্বীন বুঝে আমল করার তাওফীক দান করুন। আমীন

 ইতি মুফতী মো. ছানা উল্লাহ,  চলবেই ইনশাআল্লাহ


কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন