রজব ও শবে মে’রাজের ফাযায়েল নিয়ে কিছু ভিত্তিহীন হাদীস

রজব ও শবে মে’রাজের ফাযায়েল নিয়ে কিছু ভিত্তিহীন হাদীস

বর্তমানে আমাদের সমাজে কিছু লোক বের হয়েছে যারা রজব ও শবে মে’রাজ নিয়ে বিভিন্ন ভিত্তিহীন হাদীস উপস্থাপনা করে সাধারণ উম্মতকে বিভ্রান্তির মাঝে লিপ্ত করছে। আসুন আজকে আমরা এ সংক্রান্ত কিছু হাদীস ও তার মান জেনে নিই।

░▒▓█►০১. হযরত আনাস (রা.) থেকে বর্ণিত-

فضائل الأوقات للبيهقي (ص: 90)

8 - أَخْبَرَنَا أَبُو الْحُسَيْنِ بْنُ بِشْرَانَ، حَدَّثَنَا أَبُو بَكْرٍ بْنُ أَحْمَدَ بْنِ سَلْمَانَ [ص:91] الْفَقِيهُ، حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ غَالِبٍ، حَدَّثَنِي مُحَمَّدُ بْنُ رِزْقٍ، حَدَّثَنَا مَنْصُورُ بْنُ زَيْدٍ، حَدَّثَنَا مُوسَى بْنُ عِمْرَانَ، قَالَ: سَمِعْتُ أَنَسَ بْنَ مَالِكٍ، يَقُولُ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: " إِنَّ فِي الْجَنَّةِ نَهْرًا يُقَالُ لَهُ: رَجَبٌ، أَشَدُّ بَيَاضًا مِنَ اللَّبَنِ وَأَحْلَى مِنَ الْعَسَلِ، مَنْ صَامَ مِنْ رَجَبٍ يَوْمًا سَقَاهُ اللَّهُ مِنْ ذَلِكَ النَّهْرِ "

❏ অর্থ : হযরত আনাস (রা.) থেকে  বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূল (সা.) এরশাদ করেন, নিশ্চয় জান্নাতে একটি নদী আছে যার নাম রজব। এই নদীর পানি ‍দুধের চেয়ও শুভ্র এবং মধুর চেয়েও মিষ্টি। যে ব্যক্তি রজব মাসে একদিন রোযা রাখবে আল্লাহ তায়ালা তাকে ঐ নদীর পানি পান করাবেন। ফাযায়েলুল আওকাত লিল বায়াহাকী-৯০, হাদীস-১১।

❀❖ হাদীসটির মান : 

০১. আল্লামা শাওকানী (রহ.-১২৫৫) বলেন-

الفتح الرباني من فتاوى الإمام الشوكاني (6/ 3212)

وكلها أحاديث باطلة لا أصل لها 

এ রজনীর ফাযায়েল সংক্রান্ত সকল হাদীস ভিত্তিহীন-আল ফাতহুর রাব্বনী মিন ফাতাওয়ীল ইমাম শাওকানী-৬/৩২১২।

০২. হাফেজ যাহাবী (রহ.-৭৪৮) বলেন-

ميزان الاعتدال (4/ 46)

وهذا باطل 

এটি ভিত্তিহীন। মিযানুল ইতেদাল-৪/৪৬।

০৩. আল্লামা ইবনে হাজার আসকালানী (রহ.-৮৫২) বলেন-

 18 تبيين العجب بما ورد في فضل شهر رجب

موضوع 

لسان الميزان (6/ 101)

[348] " منصور" بن يزيد حدث عنه محمد بن المغيرة في فضل رجب لا يعرف والخبر باطل 

.....এটি ভিত্তিহীন। লিসানুল মিযান-৬/১০১, জীবনী-৩৪৮, তাবয়ীনুল আযব বিমা ওরাদা ফি ফাযলে শাহরে রাযাব-১৮।

০৪. ইমাম ইবনুল জাওযী (রহ.-৫৯৭) বলেন-

العلل المتناهية في الأحاديث الواهية (2/ 65)

"وَهَذَا لا يَصِحُّ وَفِيهِ مجاهيل لا ندري من هُمْ". 

এটি হাদীস নয়, উক্ত হাদীস এর সনদ বা সূত্রে অজ্ঞাত বর্ণনাকারী রয়েছেন.....। আল ইলালুল মুতানাহীয়া ফিল আহাদীসিল ওয়াহীয়া-২/৬৫।

০৫. আহলে হাদীসদের মহাগুরু শায়খ নাসীর উদ্দীন আলবানী (১৪২০) বলেন-

سلسلة الأحاديث الضعيفة والموضوعة وأثرها السيئ في الأمة (4/ 371)

باطل. 

এটি ভিত্তিহীন। সিলসিলাতুয যয়ীফা-৪/৩৭১, হাদীস-১৮৯৮।

০৬. ইমাম ইবনে হিব্বান (রহ.-৩৫৪) বলেন-

المجروحين لابن حبان (2/ 238)

909 - مُوسَى بن عُمَيْر الْعَنْبَري التَّمِيمِي أَبُو هَارُون من أهل الْكُوفَة يروي عَن الحكم وعلقمة بن وَائِل وَكَانَ يزْعم أَنه سمع أنس بْن مَالِك روى عَنْهُ وَكِيع والكوفيون كَانَ مِمَّن يروي عَن الثِّقَات مَالا يشبه حَدِيث الْأَثْبَات حَتَّى رُبمَا سبق إِلَى قلب المستمع لَهَا أَنه كَانَ الْمُتَعَمد لَهَا

.....উক্ত হাদীস এর সনদে ‘মুসা ইবনে ওমায়ের’ রয়েছে যিনি নির্ভরযোগ্য ইমামদের থেকে এমন হাদীস বর্ণনা করেন যা প্রকৃত হাদীস এর সাথে বিন্দু মাত্রও মিলে না.....তাই হাদীসটি ভিত্তিহীন.....। আল মাজরুহীন লি ইবনে হেব্বান-২/২৮৩, জীবনী নং-৯০৯।

০৭. ইমাম ইবনুল কিসরানী (রহ-৫০৭) বলেন-

تذكرة الحفاظ لابن القيسراني =أطراف أحاديث كتاب المجروحين لابن حبان (ص: 124)

288 - «إِنَّ فِي الْجَنَّةِ نَهَرًا يُقَالُ لَهُ رَجَبٌ، أَشَدُّ بَيَاضًا مِنَ اللَّبَنِ وَأَحْلَى مِنَ الْعَسَلِ. . .» الْحَدِيثَ.

رَوَاهُ مُوسَى بْنُ عُمَيْرٍ الْعَنْبَرِيُّ أَبُو هَارُونَ، عَنْ أَنَسٍ.

وَمُوسَى هَذَا لا شَيْءَ فِي الْحَدِيثِ.

উক্ত হাদীস এর সনদে মূসা ইবনে ওমায়ের রয়েছে হাদীস এর জগতে তিনি ভিত্তিহীন। তাজকেরাতুল হুফফাজ-১২৪, জীবনী-২৮৮, মারেফাতুজ তাযকেরা ফি আহাদীসিল মাওজুয়া-১২৩।

০৮. ইমাম মুহাম্মাদ ইবনে আব্দুল হাদী (৭৪৪) বলেন-

رسالة لطيفة 49

ليس له إسناد أو له إسناد ولا يحتج بمثله النقاد من أهل العلم

উক্ত হাদীস এর এমন একটি সনদও নেই যে, যা জারাহ ও তাদীলের ইমামগণের নিকট প্রমাণযোগ্য। রিসালাতু লাতিফা-৪৯।

✿ উক্ত হাদীস এর আরো যে সব অনির্ভরযোগ্য সনদ রয়েছে-

رواه أبو محمد الخلال في " فضل شهر رجب " (11 / 1) والديلمي (1

/ 2 / 281) والأصبهاني في " الترغيب " (224 / 1 - 2) عن منصور بن يزيد

الأسدي: حدثنا موسى بن عمران قال: سمعت أنس بن مالك يقول ... ، فذكره

مرفوعا. قلت: وهذا إسناد ضعيف مجهول، موسى بن عمران لم أعرفه، ووقع عند

الديلمي: " موسى بن عبد الله بن يزيد ". ومنصور بن يزيد قال الذهبي: " لا

يعرف، والخبر باطل، قرأته ... ". ثم ساقه بإسناده إلى منصور به، إلا أنه

وقع فيه: " موسى بن عبد الله الأنصاري ". والله أعلم.

✿ উল্লেখ্য যে, উক্ত হাদীস এর সনদ এর মাঝে ‘মুসা ইবনে ইমরান আল লাইসী’ সম্পর্কে ইমাম ইবনে হেব্বান বলেন, তিনি মাজহুল তথা অজ্ঞাত। আর ইমাম যাহাবী (রহ.) বলেন-لم أر له ذكرا إلا في هذا الأثر আমি এই বর্ণনা ব্যতীত তার আলোচনাই দেখিনি। এবং মানসূর ইবনে ইয়াযীদ ও মাজহুলুল হাল।

✏ জারাহ ও তাদিলের বিখ্যাত ইমামদের মত অনুসারে উক্ত হাদীস ভিত্তিহীন তা প্রমাণিত।

░▒▓█►০২. হযরত সালমান ফারেসী (রা.) এর হাদীস-

فضائل الأوقات للبيهقي (ص: 95)

11 -  أَخْبَرَنَا أَبُو عَبْدِ اللَّهِ الْحَافِظُ، رَحْمَةُ اللَّهُ عَلَيْهِ، قَالَ: حَدَّثَنِي أَبُو نَصْرٍ رَشِيقُ بْنُ عَبْدِ اللَّهِ الرُّومِيُّ , إِمْلَاءً مِنْ أَصْلِ كِتَابِهِ بِالطَّابِرَانِ، حَدَّثَنَا الْحُسَيْنُ بْنُ إِدْرِيسَ الْأَنْصَارِيُّ، حَدَّثَنَا خَالِدُ بْنُ  الْهَيَّاجِ , عَنْ أَبِيهِ، عَنْ سُلَيْمَانَ التَّيْمِيِّ، عَنْ أَبِي عُثْمَانَ، عَنْ سَلْمَانَ الْفَارِسِيِّ، قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: فِي رَجَبٍ يَوْمٌ وَلَيْلَةٌ مَنْ صَامَ ذَلِكَ الْيَوْمَ وَقَامَ تِلْكَ اللَّيْلَةَ كَانَ كَمَنْ صَامَ مِنَ الدَّهْرِ مِائَةَ سَنَةٍ وَقَامَ مِائَةَ سَنَةٍ وَهُوَ لِثَلَاثٍ بَقِينَ مِنْ رَجَبٍ، وَفِيهِ بَعَثَ اللَّهُ مُحَمَّدًا صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ

❏ অর্থ : হযরত সালমান ফারসী (রা.) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূল (সা.) এরশাদ করেন, রজব মাসে এমন একটি দিন ও রাত রয়েছে সে দিনে রোযা রাখলে এবং সে রাতে নামায পড়লে একশত বছর রোযা ও একশত বছর নামাযের সাওয়াব পাবে। আর সে দিনটি হল ২৭শে রজব। এদিনেই আল্লাহ তায়ালা নবীজির নবুয়াত প্রকাশ করেছেন।  ফাযায়েলুল আওকাত লিল বায়াহাকী-৯৫, হাদীস-১১।

❀❖ হাদীসটির মান :  

০১. আল্লাম ইবনে হাজার আসকালানী (রহ.-৮৫২) বলেন-

 18 تبيين العجب بما ورد في فضل شهر رجب

منكر إلى الغاية

উক্ত হাদীসটি খুবই মুনকার তথা অবিশ্বাস্য। তাবয়ীনুল আযব বিমা ওরাদা ফি ফাযলে শাহরে রাযাব-৪৩।

০২. আল্লামা ইবনু আররাক (রহ.-৯৬৩) বলেন-

تنزيه الشريعة المرفوعة عن الأخبار الشنيعة الموضوعة (2/ 161)

 (41) [حَدِيثُ] فِي رَجَبٍ يَوْمٌ وَلَيْلَةٌ مَنْ صَامَ ذَلِكَ الْيَوْمَ وَقَامَ تِلْكَ اللَّيْلَةَ كَانَ لَهُ مِنَ الأَجْرِ كَمَنْ صَامَ مِائَةَ سَنَةٍ وَقَامَ مِائَةَ سَنَةٍ وَهِيَ لِثَلاثٍ بَقِينَ مِنْ رَجَبٍ فِي ذَلِكَ الْيَوْمِ بَعَثَ اللَّهُ نَبِيًّا مُحَمَّدًا (مي) من حَدِيث سلمَان وَفِيه خَالِد بن هياج عَن أَبِيه وَهياج تركُوا حَدِيثه (قلت) قَالَ الْحَافِظ ابْن حجر فِي تَبْيِين الْعجب هياج هُوَ ابْن بسطَام النميمي الْهَرَوِيّ روى عَن جمَاعَة من التَّابِعين وَضَعفه ابْن معِين، وَقَالَ أَبُو دَاوُد تَرَكُوهُ وَقَالَ صَالح بن مُحَمَّد الْحَافِظ الملقب بجزرة الْهياج، لَا يكْتب من حَدِيثه إِلَّا حديثان أَو ثَلَاثَة للاعتبار وَلم أكن أعلم أَنه بِكُل هَذَا حَتَّى قدمت هراة فَرَأَيْت عِنْدهم أَحَادِيث مَنَاكِير كَثِيرَة لَهُ قَالَ الْحَاكِم أَبُو عبد الله وَهَذِه الْأَحَادِيث الَّتِي رَآهَا صَالح من حَدِيث الْهياج الذَّنب فِيهَا لِابْنِهِ خَالِد وَالْحمل فِيهَا عَلَيْهِ، وَقَالَ يحيى بن أَحْمد بن زِيَاد الْهَرَوِيّ، كلما أنكر على الْهياج فَهُوَ من جِهَة ابْنه خَالِد انْتهى وعَلى هَذَا فالآفة فِي هَذَا الحَدِيث من خَالِد قَالَ الْحَافِظ وروينا فِي جُزْء من فَوَائِد هناد النَّسَفِيّ بِإِسْنَاد لَهُ مُنكر

উক্ত হাদীসটি প্রমাণযোগ্য নয়। কেননা উক্ত হাদীস এর সনদ এর মাঝে ‘খালেদ ইবনে হাইয়াজ’ একজন প্রত্যাখিত ও অনির্ভরযোগ্য বর্ণনাকারী। তানযীহুশ শরীয়াহ-২/১৬১।

০৩. আল্লামা ফাতানী (রহ.-৯৮৬) বলেন-

تذكرة الموضوعات للفتني (ص: 116)

«فِي رَجَبٍ يَوْمٌ وَلَيْلَةٌ مَنْ صَامَ ذَلِكَ الْيَوْمَ وَقَامَ تِلْكَ اللَّيْلَةَ كَانَ لَهُ مِنَ الأَجْرِ كَمَنْ صَامَ مِائَةَ سَنَةٍ وَقَامَ مِائَةَ سَنَةٍ وَهِيَ لِثَلاثِ لَيَالٍ بَقِينَ مِنْ رَجَبٍ فِي ذَلِكَ الْيَوْمِ بَعَثَ اللَّهُ مُحَمَّدًا نَبِيًّا» فِيهِ هياج تَرَكُوهُ.

উক্ত হাদীস এর সনদে হায়য়াজ নামক প্রত্যাখিত বর্ণনাকারী রয়েছেন (তাই হাদীসটি ভিত্তিহীন)। তাজকেরাতুল মাওযুয়াত-১১৬।

০৪. আল্লামা শাওকানী (রহ.-১২৫০) বলেন-

الفوائد المجموعة (ص: 439)

3 - حديث: "فِي رَجَبٍ يَوْمٌ وَلَيْلَةٌ، مَنْ صَامَ ذَلِكَ الْيَوْمَ، وَقَامَ تِلْكَ اللَّيْلَةَ. كَانَ لَهُ مِنَ الأَجْرِ كمن صام مائة سنة _ إلخ.

قَالَ فِي الذَّيْلِ: فِي إسناده: هياج، تركوه.

উক্ত হাদীস এর সনদে হায়য়াজ নামক প্রত্যাখিত বর্ণনাকারী রয়েছেন (তাই হাদীসটি ভিত্তিহীন)। আল ফাওয়ায়েদুল মাজমুয়া-৪৩৯।

✏ এছাড়াও উক্ত বর্ণনাকারীর ব্যাপারে জারাহ ও তাদীলের প্রায় ১৫ জন ইমাম নিন্দিত মন্তব্য করেছেন। যেমন আবূ হাতেম আর রাজী, ইমাম আবূ দাউদ, ইমাম আবূ আব্দুল্লাহ হাকেম, আবূ হাতেম ইবনে হেব্বান আল বুসতী, আবূ নুঈম, আহমদ বিন হাম্বাল, যাহাবী, দারা কুতনী, ইয়াহয়া বিন মুঈন, ইয়াহয়া বিন আহমদ আল হারাবী ইত্যাদি ইমামগণ।

✏  তাই জারাহ ও তাদিলের বিখ্যাত ইমামদের মত অনুসারে এই  হাদীসটিও ভিত্তিহীন তা প্রমাণিত।

✏  বি. দ্র. সন্মানিত পাঠক বৃন্দ এই তাহকীক করার জন্য পূর্বে কোন প্রস্তুতি ছিল কতক ভাইয়ের আবেদনে খুব স্বল্প সময়ে তাহকীক করা হয়েছে তাই সময় সংক্ষিপ্ততার কারণে আরো বিস্তারিত তাহকীক করা সম্ভব হয় নি।

✔ প্রিয় পাঠক দেখুন যারা উক্ত রাত্রির ফাযায়েল ও রোজা রাখতে হবে বলে মন্তব্য করেন তাদের নিকট উক্ত দুটি হাদীসই সব চেয়ে উন্নত। তাই আমি উক্ত দু‘টি হাদীসকে উল্লেখ করে আলোচনা করলাম। নিশ্চয় আপনারা বুঝেছেন যে, উন্নত (!) হাদীস দুটির কি করুণ অবস্থা? 

এজন্য আল্লামা শাওকানী (রহ.-১২৫৫) বলেন-الفتح الرباني من فتاوى الإمام الشوكاني (6/ 3212)

وكلها أحاديث باطلة لا أصل لها এ রজনীর ফাযায়েল সংক্রান্ত সকল হাদীস ভিত্তিহীন-আল ফাতহুর রাব্বনী মিন ফাতাওয়ীল ইমাম শাওকানী-৬/৩২১২। 

আল্লাম  ইবনে তাইমিয়া (রহ.) বলেন-

قال شيخ الإسلام ابن تيمية رحمه الله في "مجموع الفتاوى" (25/290) :

" وأما صوم رجب بخصوصه فأحاديثه كلها ضعيفة ، بل موضوعة ، لا يعتمد أهل العلم على شيء منها ، وليست من الضعيف الذي يروى في الفضائل ، بل عامتها من الموضوعات المكذوبات . . .

وفي المسند وغيره حديث عن النبي صلى الله عليه وسلم أنه أمر بصوم الأشهر الحرم : وهي رجب وذو القعدة وذو الحجة والمحرم . فهذا في صوم الأربعة جميعا لا من يخصص رجبا " انتهى باختصار .

শুধু রজব মাসকে উদ্দেশ্য করে রোজা রাখা সংক্রান্ত সকল হাদীস ভিত্তিহীন ও মিথ্যা.........। মাজমুউল ফাতাওয়া-২৫/২৯০।

আল্লামা ইবনুল কায়্যিম (রহ.) বলেন-

وقال ابن القيم رحمه الله :

" كل حديث في ذكر صيام رجب وصلاة بعض الليالي فيه فهو كذب مفترى " انتهى من "المنار المنيف" (ص96) .

রজব মাসে রোজা ও তার বিভিন্ন রাত্রিতে নামায পড়া এগুলো সব মিথ্যা ও ধোকা। আল মানারুল মুনিফ--৯৬।

আল্লাম ইবনে হাজার আসকালানী (রহ.) বলেন-

وقال الحافظ ابن حجر في "تبيين العجب" (ص11) :

" لم يرد في فضل شهر رجب , ولا في صيامه ولا صيام شيء منه معين , ولا في قيام ليلة مخصوصة فيه حديث صحيح يصلح للحجة " انتهى .

 রজব মাসের ফযিলত ও তার নির্ধারিত কোন দিনে রোজা রাখা ও নির্ধারিত কোন রাত্রিতে নামায পড়া সংক্রান্তে বর্ণিত কোন হাদীস সহীহ ও প্রমাণযোগ্য নয়। তাবয়ীনুল আযব-১১।

শায়খ ইবনে আসিমীন বলেন-

" صيام اليوم السابع العشرين من رجب وقيام ليلته وتخصيص ذلك بدعة , وكل بدعة ضلالة " انتهى .

"مجموع فتاوى ابن عثيمين" (20/440) 

রজবের ২৭ তারিখ রোযা রাখা ও রাত্রিকে নির্দারণ করে ইবাদত করা বেদআত আর প্রত্যেক বেদআতই গোমরাহী। মাজমুআয়ে ফাতাওয়ায়ে ইবনে আসিমীন-২০/৪৪০।মহান আল্লাহ আমাদেরকে সঠিক দ্বীন বুঝে আমল করার তাওফীক দান করুন। আমীন

✍ইতি মুফতী মো. ছানা উল্লাহ