শনিবার, ২৩ মে, ২০১৫

সমুদ্রের মাঝে নিক্ষিপ্ত সম্পদ পৌঁছে গেলো কাঙ্ক্ষিত স্থানে * কারামাতের অস্বিকারকারীগণ কি জবাব দিবেন এখানে?

সমুদ্রের মাঝে নিক্ষিপ্ত সম্পদ পৌঁছে গেলো কাঙ্ক্ষিত স্থানে * 
কারামাতের অস্বিকারকারীগণ কি জবাব দিবেন এখানে?
সাম্প্রতিক কালে আমাদের কথিত আহলে হাদীস ভাইগণ ‘কারামাত’ এর নাম শুনলেই প্রস্তুত হয়ে পড়ে কুফরী বলে ফাতওয়া দেয়ার জন্য। এখন আমার প্রশ্ন হলো যদি ঐ কারামত সহীহ বুখারী থেকে প্রমাণিত হয়, তাহলে তারা কি বলবে? (চিরকাল আমার এই চ্যালেঞ্জ তাদের প্রতি থাকলো)

✏ দেখুন সহীহ বুখারী থেকে এক আশ্চার্যকর ঘটনা-
صحيح البخاري (3/ 95)
2291 - قَالَ أَبُو عَبْدِ اللَّهِ: وَقَالَ اللَّيْثُ: حَدَّثَنِي جَعْفَرُ بْنُ رَبِيعَةَ، عَنْ عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ هُرْمُزَ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ، عَنْ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: " أَنَّهُ ذَكَرَ رَجُلًا مِنْ بَنِي إِسْرَائِيلَ، سَأَلَ بَعْضَ بَنِي إِسْرَائِيلَ أَنْ يُسْلِفَهُ أَلْفَ دِينَارٍ، فَقَالَ: ائْتِنِي بِالشُّهَدَاءِ أُشْهِدُهُمْ، فَقَالَ: كَفَى بِاللَّهِ شَهِيدًا، قَالَ: فَأْتِنِي بِالكَفِيلِ، قَالَ: كَفَى بِاللَّهِ كَفِيلًا، قَالَ: صَدَقْتَ، فَدَفَعَهَا إِلَيْهِ إِلَى أَجَلٍ مُسَمًّى، فَخَرَجَ فِي البَحْرِ فَقَضَى حَاجَتَهُ، ثُمَّ التَمَسَ مَرْكَبًا يَرْكَبُهَا يَقْدَمُ عَلَيْهِ لِلْأَجَلِ الَّذِي أَجَّلَهُ، فَلَمْ يَجِدْ مَرْكَبًا، فَأَخَذَ خَشَبَةً فَنَقَرَهَا، فَأَدْخَلَ فِيهَا أَلْفَ دِينَارٍ وَصَحِيفَةً مِنْهُ إِلَى صَاحِبِهِ، ثُمَّ زَجَّجَ مَوْضِعَهَا، ثُمَّ أَتَى بِهَا إِلَى البَحْرِ، فَقَالَ: اللَّهُمَّ إِنَّكَ تَعْلَمُ أَنِّي كُنْتُ تَسَلَّفْتُ فُلاَنًا أَلْفَ دِينَارٍ، فَسَأَلَنِي كَفِيلاَ، فَقُلْتُ: كَفَى بِاللَّهِ كَفِيلًا، فَرَضِيَ بِكَ، وَسَأَلَنِي شَهِيدًا، فَقُلْتُ: كَفَى بِاللَّهِ شَهِيدًا، فَرَضِيَ بِكَ، وَأَنِّي جَهَدْتُ أَنْ أَجِدَ مَرْكَبًا أَبْعَثُ إِلَيْهِ الَّذِي لَهُ فَلَمْ أَقْدِرْ، وَإِنِّي أَسْتَوْدِعُكَهَا، فَرَمَى بِهَا فِي البَحْرِ حَتَّى وَلَجَتْ فِيهِ، ثُمَّ انْصَرَفَ وَهُوَ فِي ذَلِكَ يَلْتَمِسُ مَرْكَبًا يَخْرُجُ إِلَى بَلَدِهِ، فَخَرَجَ الرَّجُلُ الَّذِي كَانَ أَسْلَفَهُ، يَنْظُرُ لَعَلَّ مَرْكَبًا قَدْ جَاءَ بِمَالِهِ، فَإِذَا بِالخَشَبَةِ الَّتِي فِيهَا المَالُ، فَأَخَذَهَا لِأَهْلِهِ حَطَبًا، فَلَمَّا نَشَرَهَا وَجَدَ المَالَ وَالصَّحِيفَةَ، ثُمَّ قَدِمَ الَّذِي كَانَ أَسْلَفَهُ، فَأَتَى بِالأَلْفِ دِينَارٍ، فَقَالَ: وَاللَّهِ مَا زِلْتُ جَاهِدًا فِي طَلَبِ مَرْكَبٍ لِآتِيَكَ بِمَالِكَ، فَمَا وَجَدْتُ مَرْكَبًا قَبْلَ الَّذِي أَتَيْتُ فِيهِ، قَالَ: هَلْ كُنْتَ بَعَثْتَ إِلَيَّ بِشَيْءٍ؟ قَالَ: أُخْبِرُكَ أَنِّي لَمْ أَجِدْ مَرْكَبًا قَبْلَ الَّذِي جِئْتُ فِيهِ، قَالَ: فَإِنَّ اللَّهَ قَدْ أَدَّى عَنْكَ الَّذِي بَعَثْتَ فِي الخَشَبَةِ، فَانْصَرِفْ بِالأَلْفِ الدِّينَارِ رَاشِدًا "
✏ অর্থ : হযরত লায়স (রহ.) আবূ হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণনা করেন যে, রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, নবী ইসরাঈলের কোন এক ব্যক্তি বনী ইসরাঈলের অপর এক ব্যক্তির নিকট এক হাজার দীনার ঋণ চাইল। তখন সে (ঋণ দাতা) বলল, কয়েকজন সাক্ষী আন, আমি তাদেরকে সাক্ষী রাখব। সে বলল, সাক্ষী হিসাবে আল্লাহই যথেষ্ট। তারপর (ঋণ দাতা) বলল, তা হলে একজন যামিনদার উপস্থিত কর। সে বলল, যামিনদার হিসাবে আল্লাহই যথেষ্ট। ঋণদাতা বলল, তুমি সত্যই বলেছ। এরপর নির্ধারিত সময়ে পরিশোধের শর্তে তাকে এক হাজার দীনার দিয়ে দিল। তারপর ঋণ গ্রহীতা সামুদ্রিক সফর করল এবং তার প্রয়োজন সামাধা করে সে যানবাহন খুঁজতে লাগল, যাতে সে নির্ধারিত সময়ের ভেতর ঋণদাতার কাছে এসে পৌঁছিতে পারে। কিন্তু সে কোন যানবাহন পেল না। তখন সে এক টুকরো কাঠ নিয়ে তা ছিদ্র করল এবং ঋণদাতার নামে একখানা পত্র ও এক হাজার দীনার তার মধ্যে ভরে ছিদ্রটি বন্ধ করে সমুদ্রে তীরে এসে বলল, হে আল্লাহ! তুমি তো জান আমি অমুকের নিকট এক হাাজর দীনার ঋণ চাইলে সে আমার কাছে যামিনদার চেয়েছিল। আমি বলে ছিলেন, আল্লাহই যামিন হিসাবে যথেষ্ট। এতে সে রাযী হয়। তারপর সে আমার কাছে সাক্ষী চেয়েছিল, আমি বলে ছিলাম সাক্ষী হিসাবে আল্লাহই যথেষ্ট, তাতেও সে রাযী হয়ে যায়। আমি তার ঋণ (যথাসময়ে) পরিশোধের উদ্দেশ্যে যানবাহনের জন্য যথাসাধ্য চেষ্টা করেছি, কিন্তু পাইনি। তাই আমি তোমার নিকট সোপর্দ করলাম, এই বলে সে কাষ্ঠখণ্ডটি সমদ্রে নিক্ষেপ করল। আর কাষ্ঠখণ্ডটি সমুদ্রে প্রবেশ করল। অতঃপর লোকটি ফিরে গেল। এবং নিজের শহরে যাওয়ার জন্য যানবাহন খুঁজতে লাগল। ওদিকে ঋণদাতা এই আশায় সমুদ্রতীরে গেল যে, হয়তবা ঋণগ্রহীতা কোন নৌযানে করে তার মাল নিয়ে এসেছে। তার দৃষ্টি কাষ্ঠখণ্ডটির উপর পড়ল, যার ভিতরে মাল ছিল। সে কাষ্ঠখণ্ডটি তার পরিবারের জ্বালানির জন্য বাড়ী নিয়ে গেল। যখন সে তা চিরল, তখন সে মাল ও পত্রটি পেয়ে গেল। কিছুদিন পর ঋণগ্রহীতা এক হাজার দীনার নিয়ে এসে হাযির হল। এবং বলল, আল্লাহর কসম আমি আপনার মাল যথা সময়ে পৌঁছিয়ে দেয়ার উদ্দেশ্যে সব সময় যানবাহনের খোঁজে ছিলাম। কিন্তু আমি যে নৌযানে এখন আসলাম, তার আগে আর কোন নৌযান পাইনি। ঋণদাতা বলল, তুমি কি আমার নিকট কিছু পাঠিয়েছিলে? ঋণগ্রহীতা বলল, আমি তো তোমাকে বললামই যে এর আগে আর কোন নৌযান আমি পাইনি। সে বলল, তুমি কাঠের টুকরোর ভিতরে যা পাঠিয়েছিলে, তা আল্লাহ তোমার পক্ষ হতে আমাকে আদায় করে দিয়েছেন। তখন সে আনন্দচিত্তে এক হাজার দীনার নিয়ে ফিরে চলে এল। সহীহ আল বুখারী-৩/৯৫, হাদীস-২২৯১।

░▒▓█►উক্ত ঘটনা থেকে কথিত আহলে হাদীসদের প্রতি মাত্র দুটি প্রশ্ন : ◄█▓▒
০১. ঋণ গ্রহীতা ব্যক্তি কাষ্ঠখণ্ডটির মাঝে দীনারগুলো রেখে, ঋণদাতা ব্যক্তির কাছে ঋণ পৌঁছে যাবে বলে বিশ্বাস স্থাপন করে  দীনারগুলো সমুদ্রের মাঝে ফেলে দেয়া, এবং আল্লাহ তা পৌঁছিয়ে দিবেন বলে বিশ্বাস রাখা, কি শিরকী আকিদা নয়? যদি বলেন হ্যাঁ, তাহলে বুখারী পড়া যাবে না। কেননা তাতে শিরক আছে, আর যদি বলেন না তাহলে কারামতকে অস্বীকার করবেন কোন দলীলে? আজ থেকে তাওবা করুন!

০২. ঋণদাতা ব্যক্তি সমুদ্র থেকে তার ঋণ পেয়ে গিয়েছেন, এটি কি আপনারা বিশ্বাস করেন? যদি বলেন না তাহলে সহীহ হাদীসকে অস্বিকার করার দরুন আপনারা কি মুসলিম থাকবেন? আর যদি বলেন হ্যাঁ, তাহলে কোন যুক্তিতে আপনারা কারামাতকে অস্বিকার করেন? সর্বপরী তাওবা করার জন্য প্রস্তুত হন।

মহান আল্লাহ তায়ালা আমাদেরকে সঠিক দ্বীন বুঝে আমল করার তাওফীক দান করুন। আমীন

✍ ইতি  মুফতী মো. ছানা উল্লাহ

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন